ঐতিহ্য হারাচ্ছে ‘মৃৎশিল্প’

প্রকাশঃ মে ২৪, ২০১৫ সময়ঃ ৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:৩৪ অপরাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:

1sকালের আবর্তে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে দেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্পগুলো। মৃৎশিল্প তাদের একটি। বহুমুখী সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ সংকটের মুখে এ শিল্প।

পিরোজপুর জেলার কাউখালী সন্ধ্যা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকা সোনাকুর গ্রাম যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা একটি স্বর্ণালী ছবি। বন্দর থেকে লঞ্চ ঘাটে দাঁড়ালে চোখে পড়বে ছোট বড় অসংখ্য কুটিরের নয়নাভিরাম দৃশ্য। যা সহজেই আপনার মনকে পুলকিত করবে।

সোনাকুর গ্রাম আকারে অনেকটাই ছোট। এ গ্রামে প্রায় ৭০/৭৫ টি পরিবার আছে এবং প্রত্যেক পরিবারে গড়ে প্রায় ৭ জন সদস্য ও লোক সংখ্যা প্রায় ৮/৯ শত।

সোনাকুর বৃহত্তর বরিশালের একমাত্র মৃৎশিল্পের গ্রাম। একসময় এ শিল্পের জন্য খুবই বিখ্যাত ছিল গ্রামটি। এ ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে আজ আমরা হারাতে বসেছি।

বিজ্ঞানের জয়যাত্রা, প্রযুক্তির উন্নয়ন ও নতুন নতুন শিল্প সামগ্রীর প্রসারের কারণে এবং প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও অনুকূল বাজারের অভাবে এ শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে।2n

কাউখালী উপজেলার সোনাকুর গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মাটির জিনিষপত্র তার পুরনো ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। ফলে এ পেশায় যারা জড়িত এবং যাদের জীবীকার একমাত্র অবলম্বন মৃৎশিল্প তাদের জীবন যাপন একেবারেই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশর বিভিন্ন অঞ্চলের মতো কাউখালী উপজেলার সোনাকুর গ্রামের মৃৎশিল্পে নিয়োজিত কুমাররা অধিকাংশই পাল সম্প্রদায়ের । প্রাচীন কাল থেকে ধর্মীয় এবং আর্থ সামাজিক কারনে মৃৎশিল্পে শ্রেনীভূক্ত সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তী সময়ে অন্য সম্প্রদায়ের লোকেরা মৃৎশিল্পকে পেশা হিসেবে গ্রহন করে। কয়েকশো বছর আগে এ শিল্পের সাথে জড়িত হয় এ গ্রামের কুমাররা।

কিন্তু বাজারে এখন আর আগের মতো মাটির জিনিষ পত্রের চাহিদা না থাকায় এর স্থান দখল করে নিয়েছে দস্তা, অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈজসপত্র। ফলে বিক্রেতারা মাটির জিনিষপত্র আগের মতো আগ্রহের সাথে নিচ্ছেনা। তাদের চাহিদা নির্ভর করে ক্রেতাদের ওপর।3r

কিন্তু গ্রাম-গঞ্জের অঁজ পাড়াগাঁ পর্যন্ত এখন আর মাটির হাড়ি পাতিল তেমনটা চোখে পড়ে না। সে কারনে অনেক পুরনো শিল্পীরাও পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছে। কেউ রিকসা চালায়, কেউবা দিন মজুরী করে জীবিকার পথ বেছে নিয়েছে।

এছাড়া সন্ধ্যা নদীর তীব্র ভাঙ্গনে গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সংকুচিত হয়ে আসছে তাদের গ্রাম।

দুঃখ কষ্টের মাঝে দিন কাটলেও কাউখালীর মৃৎশিল্পীরা এখনও স্বপ্ন দেখেন।

একদিন আবার কদর বাড়বে মাটির পণ্যের। সেদিন হয়তো আবারো তাদের পরিবারে ফিরে আসবে সুখ-শান্তি। আর সেই সুদিনের অপেক্ষায় দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা ।

প্রতিক্ষণ/এডি/জহির

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G