করলা যেখানে জীবনের চাঁকা
ক্ষেতে আসার প্রস্তুতি নিয়ে যেন ঘুম ভাঙ্গে সবার। প্রতিদিন ভোরের সূর্য উঠার পর পরই ক্ষেতে শুরু হয় করলা তোলার মহা উৎসব।
আর ক্ষেত থেকে করলা তোলার পর সারি সারি ডালি নিয়ে কৃষকরা হাজির হয় স্থানীয় খরসতি ঈদগাহ মাঠে। আর এখানেই বসে বিশাল হাট। এখন এ চিত্র যেন প্রতিদিনের এক চিরচেনা রুপ।
সবজি গ্রামখ্যাত নাটোরের সিংড়া উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের খরসতি গ্রামের কথা। যেখানে ছেলে বুড়ো সকলের একটাই পেশা কৃষি কাজ।
এখন এ গ্রামে এখন নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ সবার মাঝে বইছে সবুজের আনন্দ। গ্রাম জুড়ে করলার সমারোহ। ইতোমধ্যে করলার গ্রাম হিসেবে এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এখানে এসে করলা পাইকারি কিনে নিয়ে যায়। প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার মণ করলা এখান থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে চলে যায়। অথচ বাম্পার ফলন হলেও উৎপাদিত করলার ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৭০ হেক্টর জমিতে করলার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে খরসতি গ্রামেই ২৫ হেক্টর জমিতে করলার আবাদ হয়েছে। এ বছর করলা আবাদে উৎপাদিত ফসলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৪০ মেট্টিক টন।
গ্রামের শতকরা ৯৫ জন করলা চাষ করে। ভালো মানের করলা হলে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব। কিন্তু এ এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকার কারণে অর্ধেক দামে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে করলা বিক্রি করতে হয়। অনেক সময় পাইকারি ব্যবসায়ীরা না আসায় ক্ষেতের করলা ক্ষেতেই পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।
সিংড়া উপজেলা সদর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে এ গ্রামে যানবহন নিয়ে আসতে মানুষেরা ভয় পায়। বাম্পার ফলন হলেও রাস্তার বেহাল দশার কারণে কৃষকরাও ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না।
প্রতিক্ষণ/এডি/নুর