কিশোরীকে ২৬ টুকরার মামলায় আসামীর মৃত্যুদন্ড

প্রকাশঃ এপ্রিল ৫, ২০১৭ সময়ঃ ১:১৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৫০ অপরাহ্ণ

রাজধানীর হাতিরপুল নাহার প্লাজার ১৩ তলায় সোনালী ট্যুরিস্ট অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সিতে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা এবং লাশ ২৬ টুকরা করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় একমাত্র আসামি সাইদুজ্জামান বাচ্চুকে মৃতদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল- ৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার আসামি বর্তমানে জামিনে পলাতক আছেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ১ জুন থেকে ২ জুন পর্যন্ত শাহবাগ থানাধীন হাতিরপুলের পরীবাগ এলাকা থেকে গার্মেন্টসকর্মী ওই কিশোরীর ২৬ টুকরা লাশ উদ্ধার করা হয়। নাহার প্লাজার ১৩ তলার সোনালী ট্যুরিস্ট অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সির পাশের ভবনের ছাদ ও রাস্তার উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা টুকরা টুকরা হাড় আর মাংসপিণ্ড উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ সোনালী ট্রাভেলসের মালিক সাইদুজ্জামান বাচ্চুকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যা ও লাশ টুকরা করার কথা স্বীকার করেন। পরবর্তীতে তিনি আদালত থেকে জামিন নিয়ে বর্তমানে পলাতক আছেন।

এর আগে ২০১২ সালের জুন মাসে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাইদুজ্জামানকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। সেখানে তিনি ওই কিশোরীকে হত্যা ও লাশ টুকরা করার বীভৎস বিবরণ দেন। তিনি দাবি করেন, রাত সাড়ে আটটার দিকে মেয়েটিকে নিয়ে তার অফিসে ঢোকার পর লোকজনের কাছে ধরা পড়ার ভয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

তদন্তে পাওয়া তথ্য ও সাইদুজ্জামানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ ওই সময় জানায়, ওই কিশোরীর নাম রুমি (১৫)। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার গাজীপুর কাজীপাড়া এলাকায়। সাইদুজ্জামানের (৩৫) বাড়ি একই জেলার মধুখালীর বকশিচাঁদপুরে। সাইদুজ্জামান হাতিরপুলের নাহার প্লাজার সোনালী ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের মালিক। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন সাইদুজ্জামান অফিসেই থাকতেন বলে দাবি করেন।

সাইদুজ্জামান ওই সময় স্বীকার করেন, দৈহিক সম্পর্ক গড়ার পর তিনি ওই কিশোরীকে গলা টিপে হত্যা করে লাশ টুকরা টুকরা করে জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলেন এবং কিছু অংশ বাথরুমের কমোডে ফেলে ফ্ল্যাশ করে দেন। সাইদুজ্জামানের দাবি, তিনি একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

খুন করার পর পালিয়ে যাননি কেন, জানতে চাইলে সাইদুজ্জামান দাবি করেন, লোকজন বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেওয়ায় তিনি পালাতে পারেননি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ওই সময় জানায়, হত্যার আগে নির্যাতনের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এবং লাশ গোপন করার চেষ্টার অভিযোগে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় সাইদুজ্জামানের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে।

গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, রুমিরা পাঁচ ভাইবোন। রুমি মা-বাবার তৃতীয় সন্তান। তার বাবা মারা গেছে। মা বাসাবাড়িতে কাজ করেন। রুমির তিন বোন ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। রুমিও চাকরি করতে ঢাকা এসেছিল। সাইদুজ্জামানের বাড়ি মধুখালী। তবে গ্রামের বাড়িতে তার খুব বেশি যাতায়াত ছিল না।

প্রতিক্ষণি/ এডি/রন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G