কোমর ছাড়িয়ে পায়ের পাতায় চুল যাদের
প্রতিক্ষণ ডেস্ক:
দীঘল কালো চুলের রূপকথার সেই রাজকন্যার কথা মনে আছে? রাক্ষসপুরীতে বন্দিনী কন্যা উঁচু পাঁচিলঘেরা প্রাসাদ থেকে নিচে বিছিয়ে দিয়েছিল তার কেশ। সেই কেশ বেয়ে অট্টালিকায় ঢুকে তাকে মুক্ত করেছিল রাজপুত্র।
এমন দীঘল চুলের কন্যা বাস্তবেও আছে। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় গুয়াংসি প্রদেশের হুয়াংলু গ্রামে গেলেই দেখা মিলবে তাদের। এ গ্রামের সব মেয়েই দীর্ঘ কালো কেশের অধিকারিণী। জন্মের পর মাত্র একবারই চুল কাটে তারা।
হুয়াংলু গ্রামের ঐ নারীরা ইয়াও নৃগোষ্ঠীর। এ গ্রামে ছয় শ মানুষের ৭৮টি পরিবার আছে। দুই হাজার বছর ধরে এ গোষ্ঠীটি এখানে বাস করে।
ইয়াও গোষ্ঠীর সব নারীর চুলই কোমর ছাড়িয়ে পায়ের পাতা পর্যন্ত লম্বা। দৈর্ঘ্য তিন ফুটেরও বেশি। গ্রামের সবচেয়ে বেশি লম্বা নারীর চুল সাত ফুট।
৫১ বছর বয়সী নারী প্যান জিফেং এ গ্রামেরই বাসিন্দা। তিনি জানান, ঐতিহ্যগতভাবে এ গ্রামের নারীরা জীবনে শুধু একবারই চুল কাটেন। মেয়েদের যখন বিয়ের সময় অর্থাৎ ১৮ বছর বয়স হয়, তখন তারা অনুষ্ঠান করে চুল কাটেন। এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় এই মেয়ে এখন বিয়ের উপযুক্ত।
তো গ্রামের নারীদের দীঘল কালো চুলের রহস্য কী? এর জবাবে প্যান বলেন, এখানকার নারীরা ভাত রাঁধার জন্য চাল ধোয়ার পর ঐ পানি ফেলে দেন না। আঠালো ঐ পানি দিয়ে তারা নিজেদের চুল ধৌত করেন। এ ছাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পাহাড়ি নদীর পানিতে গোসল করায় তাদের চুল সুস্থ, উজ্জ্বল ও ঝলমলে হয়ে ওঠে।
প্যান জিফেং জানালেন, গ্রামের নারীরা দল বেঁধে এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নানা পারফরম্যান্স দেখান। তিনি ও তার মেয়েও এ রকম একটি দলের সদস্য। অনেক নারী পর্যটকদের জন্য পোশাক ও কম্বল তৈরি করে বিক্রি করেন।
প্রিয় পাঠক, আপনিও ঘুরে আসতে পারেন পাহাড়ি ইয়াও নৃগোষ্ঠীর হুয়াংলু গ্রামে। পরে সেখান থেকে এসে গাইতেই পারেন- ‘তোমার চুল বাঁধা দেখতে দেখতে ভাঙল কাচের আয়না…।’
প্রতিক্ষণ/এডি/একে