স্পোর্টস ডেস্ক
ভারতীয় ক্রিকেটকে ফিক্সিংয়ের কালো থাবা থেকে মুক্তি দিতে লোধা কমিশনের আবির্ভাব। কিন্তু লোধা কমিশন যে পরামর্শ দিচ্ছে তাতে সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডের মুকুট হারাতে হবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে। তাও ছোটখাট কোনো অঙ্ক নয়, ১৬শ কোটি রুপি হাতছাড়া হতে পারে বিসিসিআইয়ের।
অনেক দিন ধরেই বিশ্বের সবচেয়ে ভারতীয় ক্রিকেটবিসিসিআই। তাদের ব্যালান্স শিট ঘেঁটে দেখা গেছে, বর্তমানে বোর্ডের বার্ষিক আয় ২ হাজার কোটি রুপি। যার অধিকাংশই আসে খেলা সম্প্রচারের স্বত্ব থেকে। লোধা কমিশন প্রস্তাব করেছে এখন থেকে ম্যাচের পুরো সময়জুড়ে বিজ্ঞাপন না দিয়ে কেবল মধ্যাহ্ন বিরতি, চা বিরতি অথবা পানি পানের বিরতিতেই দেওয়া হোক। এটি বাস্তবায়ন হলে বিজ্ঞাপন থেকে প্রাপ্ত অর্থ অনেক কমে আসবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড কর্মকর্তা জানালেন, আমরা এক পরিস্থিতির মুখে পড়েছি যার কারণে প্রায় ১৬০০ কোটি রুপি আয় কমে যাবে। নতুন এই পরামর্শ চালু হলে, স্টার স্পোর্টস (বিসিসিআইয়ের ব্রডকাস্ট সহযোগী) তাদের চুক্তির মূল্য নতুন করে নির্ধারণ করতে চাইবে। সেটা কোনোভাবেই বর্তমান মূল্যের ২০ থেকে ২৫ শতাংশের বেশি হবে না।
ওই সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে প্রতিটি ম্যাচের জন্য ৪৩ কোটি রুপি দেওয়া হয় বিসিসিআইকে। কিন্তু সম্প্রচারে এত বিধিনিষেধ এলে সেই অঙ্ক নেমে আসবে ৮-১০ কোটিতে।
এর ধাক্কা পোহাতে হবে পুরো ভারতীয় ক্রিকেটকে। বর্তমানে ৭৫০ কোটি রুপি বিভিন্ন রাজ্য দলের জন্য, ৪০০ কোটি রুপি খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি ও দৈনিক ভাতা বাবদে খরচ হয়। এ ছাড়া বয়সভিত্তিক ক্রিকেটেও ৩৫০ কোটি ব্যয় করে বিসিসিআই। ফলে লোধা কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়নের ধাক্কাটা প্রথমেই লাগবে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে। বোর্ডের ওই কর্মকর্তার ভয়টা ওখানেই, এর মানে বয়স ভিত্তিক ম্যাচ ও ক্যাম্পগুলো ঝামেলার মুখে পড়বে। আইপিএল এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতার সম্প্রচারের অর্থ তো বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু ভারতের উচ্চ আদালত এরই মধ্যে লোধা কমিশন বাস্তবায়নের জন্য বিসিসিআইয়ের ওপর চাপ দিয়েছে। খেলাটিকে বাণিজ্যের খোলস থেকে মুক্তির পথ লোধা কমিশন বাতলে দিয়েছে—এমনও মনে করেন অনেকে। যদিও বিসিসিআই বিভিন্নভাবে সাবেক খেলোয়াড়দের উচ্চ অঙ্কের ভাতা দিয়ে এমনভাবে বোর্ডের অনুগত বানিয়ে রেখেছে, কপিল দেবের মতো বিদ্রোহী কণ্ঠস্বরও এখন আর সেভাবে কথা বলেন না।
প্রতিক্ষণ/এডি/ফর