গোপালগঞ্জের চরে ধান কাটা নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা

প্রকাশঃ মে ৭, ২০১৭ সময়ঃ ৪:৫২ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৫২ অপরাহ্ণ

হেমন্ত বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:

বোরো ধান কাটার মৌসুমকে ঘিরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার চরাঞ্চলে খাস জমির মালিক দাবিদার বাহিনী তৎপর হয়ে উঠেছে। কৃষকের ধান জোরপূর্বক কেটে নিতে চরাঞ্চলে তাদের আনাগোনাও শুরু হয়েছে। এতে চরের নিরীহ ভূমিহীন কৃষকেরা ধান কাটা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

উচ্চ মূল্যের সার, ডিজেল ও শ্রমিক খাটিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কষ্টার্জিত ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের ভুগতে হচ্ছে চরম অনিশ্চয়তায়। তারা এখনই এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর দাবি জানিয়েছেন।

প্রতি বছর মধুমতির চরে প্রভাবশালীরা ভূমিহীন কৃষকদের জমি জবরদখল এবং পাকা ধান কেটে নিয়ে যায়। সাধারণ কৃষকরা বাধা দিতে গেলে হামলা-মামলার শিকার হন। এমনকি হতাহতের ঘটনাও ঘটে।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাশিয়ানী ও পার্শ্ববর্তী লোহাগড়া উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা, কলসী ফুকরা, তারাইল, পরানপুর, চরপাচাইল, চর ঘোনাপাড়া, পাংখারচর, ধানকোড়া এবং চরভাটপাড়া এলাকায় চরে বোরো ধান রোপণ ও কাটার মৌসুমে নানা অপতৎপরতা দেখা যায়। এ সময় জোর করে অন্যের জমির ধান কাটা, জমিদখল, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, হামলা-মামলাসহ বিভিন্ন তৎপরতা বেড়ে যায়।

বোরো ধান কাটার মৌসুমকে ঘিরে এবারও তৎপর হয়ে উঠেছে স্থানীয় জমির মালিক দাবিদার বাহিনী।

সূত্র জানায়, চরের বোরো ধান কাটাকে ঘিরে দুই উপজেলার তারাইল ও পরানপুর বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সুচাইল ও নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার পাচাইল মৌজার সীমানা জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দু’জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে চরের খাস জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বিষয়টি কাশিয়ানী ও লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, ইউপি চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে নিষ্পত্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি জোরপূর্বক দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক মো: রিজাউল কাজী জানান, দুই উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণ করা হয়নি। যার কারণে যে কোনো সময় বড় ধরণের সংঘাতের আশংকা রয়েছে।
কৃষক নান্টু মুন্সী অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রভাবশালী কৃষক আমাদের সীমানার মধ্যে প্রবেশ করে ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে আমরা দরিদ্র কৃষকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।’

কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: একেএম আলীনুর হোসেন বলেন, ‘চরের সংঘাত এড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

প্রতিক্ষণ/এডি/সাই

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G