চা-বিক্রেতার উপন্যাস বিক্রি হয় অ্যামাজনে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফুটপাতে বসে চা বিক্রি করলেও যে সৃষ্টিশীল হওয়া যায়, লেখক হওয়া যায় এ ধারণা হয়তো অনেকের মাথায় আসবে না। কিন্তু এই কঠিন কাজটি করে দেখিয়েছেন ভারতের মহারাষ্ট্রের লক্ষ্মণ রাও। দিল্লিতে খোলা আকাশের নিচে বসে চা বিক্রি করলেও এখন তার বই বিক্রি হয় অ্যামাজনের মতো অনলাইন বাজারে।
লেখক হওয়ার স্বপ্ন বুকে নিয়ে ১৯৭৫ সালে লক্ষ্মণ রাও দিল্লিতে আসেন। সেখানে জীবন সংগ্রামে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন, রেস্টুরেন্টে প্লেট-গ্লাস ধোয়াধুয়ি করেছেন। সেই আয়ের অর্থ জমিয়ে প্রথমে পান-বিড়ির দোকান এবং পরে এই চায়ের দোকান খোলেন তিনি। পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন নিজের পড়াশুনা। হিন্দি ভাষায় নিয়েছেন স্নাতক ডিগ্রি। দূরশিক্ষণের মাধ্যমে মাস্টার্স পরীক্ষা দিচ্ছেন।
কর্ম জীবনের প্রায় শুরু থেকেই উপন্যাস লিখতে শুরু করেন। কিন্তু বই ছাপাতে গিয়ে লক্ষ্মণ রাও পড়েন বিপদে। হিন্দি বই প্রকাশকদের নাক বেশ উঁচু। তাকে পাত্তাই দেয়নি তারা। তাই জেদ করেই ১৯৭৯ সালে টাকা জমিয়ে তিনি নিজেই প্রকাশ করেন নিজের প্রথম উপন্যাস।
তার বেস্ট সেলার `রামদাস` প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে। এখন এটির তৃতীয় সংষ্করণ চলছে। বিক্রি হয়েছে মোট চার হাজার কপি। তার বই এখন বিক্রি হয় অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্ট-এর মতো প্ল্যাটফর্মে।
অনলাইন-এ বিক্রির দিকটা দেখাশোনা করে তার ছেলে হিতেশ। লক্ষ্মণ রাও-এর ফেসবুক পেজটিও দেখাশোনা করে সে। তবে চা বিক্রেতা এবং সেই সাথে ঔপন্যাসিক লক্ষ্মণ রাও কিন্তু তার পরিশ্রমের স্বীকৃতিও পেয়েছেন।
লেখার কারণে কংগ্রেসের এক নেতার সূত্রে ১৯৮৪ সালে তাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিলেরর সঙ্গে তার আলাপ হয়েছে। কিন্তু সাহিত্য জগত থেকে তার কোন স্বীকৃতি এখনো আসেনি। কেউ তাকে ডাকেনি কোন সাহিত্য উৎসবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফসির