চীনের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ কুচকাওয়াজ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জয়ের ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষকে কেন্দ্র করে চীন এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছে। চীনের ঐতিহাসিক তিয়েনআনমেন স্কয়ারে বৃহস্পতিবার সকালে এই কুচকাওয়াজ শুরু হয়েছে।
দেশটির সামরিক কুচকাওয়াজের ইতিহাসে এবারই প্রথম বারেরমতো দেশটির সেনাবাহিনীর ১২ হাজার সৈন্য এবং ১ হাজার বিদেশি সেনা অংশ নিয়েছে। এ ছাড়া এই কুচকাওয়াজের অংশ হিসেবে পাঁচ শতাধিক সমরাস্ত্রের প্রদর্শনী হবে। সব মিলিয়ে দেশটির ইতিহাসে এমন আয়োজন আগে কখনও হয়নি। আর এই আয়োজনকে অভূতপূর্ব বলেই মনে করা হচ্ছে। বিবিসি অনলাইনের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া এবং পূর্ব চীন সাগরের বিতর্কিত এলাকা নিয়ে জাপানের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের সম্প্রতি সময়ে ভাল যাচ্ছে না। এ ছাড়া এই দুই সাগরের বিতর্কিত এলাকায় চীনের সামরিক উপস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও দেশটির কূটনৈতিক সম্পর্ক এখন কিছুটা খারাপ যাচ্ছে। ঠিক এ সময় চীনের এই বিশালাকারের সামরিক কুচকাওয়াজ অন্যদের কাছে চীনের সামরিক শক্তি প্রদর্শনেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় তিয়েনআনমেন স্কয়ারে কুচকাওয়াজ শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই চীনা প্রেসিডেন্ট তার বক্তব্যে ‘যেসব চীনা নাগরিক জাপানের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অটলভাবে লড়াই করেছে’তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। সে সাথে তিনি চীনা সেনাবাহিনী থেকে ৩ লাখ সেনা কাঁটছাঁটের ঘোষণা দেন। তবে কবে থেকে এটি শুরু হবে তা তিনি সুস্পষ্ট ভাবে জানাননি।
কুচকাওয়াজে ফ্লাই পাস্ট করেছে ২০০ যুদ্ধবিমান। এ ছাড়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাংকসহ পাঁচ শতাধিক সমরাস্ত্রের প্রদর্শনী হবে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, চীন এই কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের অস্ত্রভাণ্ডারের ৮০ ভাগই এই প্রথম জনসম্মুখে তুলে ধরছে।
এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, সুদানের ওমর আল বশির, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন হে এবং জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনসহ ৩০টি দেশের সরকার প্রধান ও প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। এর আগে বারাক ওবামাসহ পশ্চিমা নেতাদের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল চীন। তবে দক্ষিণ চীন সাগর ও পূর্ব চীন সাগর নিয়ে অব্যাহত সামরিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমা নেতারা চীনের এই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরের ইন্টারন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অব স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের গবেষক আলেক্সান্ডার নেইল বলেন, চীন ও জাপানের মধ্যে বিরাজমান তপ্ত এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক নেতাই বিষয়টিকে জাতীয়তাবাদী ও জাপানবিরোধী র্যালি হিসেবে দেখছেন বিধায় তারা এটি এড়িয়ে গেছেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ