জাতিসংঘের অধিবেশনে ওবামা-পুতিনের বাকযুদ্ধ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০১৫ সালের জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে এবার বিশ্ব নেতাদের বক্তব্যে প্রাধান্য পেয়েছে সিরিয়া ও শরণার্থী ইস্যু।
জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৫০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এতে অংশ নেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিশেষ প্রতিনিধিরা নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন অধিবেশনে।
অধিবেশনের শুরুতেই মহাসচিব বান কি-মুন সিরিয়া সংকটের বিষয়টি, আন্তর্জাতিক আদালতে উপস্থাপনের আহ্বান জানান। রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, তুরস্ক ও ইরান এ ব্যাপারে একটি রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে পারতো বলেও অধিবেশনের সভাপতি হিসেবে মন্তব্য করেন তিনি।
সিরিয়া সংকট নিরসনে রাশিয়া, ইরানসহ যে কোনো দেশের সঙ্গেই কাজ করতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। তবে চার বছর ধরে চলমান এ সংঘাতের সমাধানে পৌঁছাতে হলে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দিয়েছেন ওবামা। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ কথা বলেন তিনি।
প্রায় ৪৫ মিনিটের ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ‘সিরিয়াবাসীর জন্য কোনো শান্তিবয়ে আনতে পারবেন না আসাদ। তিনি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের জবাবে নিপীড়ন ও হত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।’ রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করা প্রসঙ্গে ওবামা বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত দেশটি ইউক্রেনের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে থাকবে ততক্ষণ বিশ্ব তার পাশে দাঁড়াতে পারে না।’
অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার ভাষণে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাশারই আইএসের সঙ্গে লড়াইয়ের উপযুক্ত ব্যক্তি। সে জন্য তার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। বাশারকে সমর্থন না করাটা এক বিরাট ভুল। আইএসবিরোধী সবাইকে নিয়ে বৃহৎ জোট গঠনেরও একটি প্রস্তাব করেন পুতিন।’
এবারের অধিবেশনে প্রথম দফায় স্পিকার হিসেবে শুরুতেই বক্তব্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ডিলমা রোসেফ, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রারেজ দুদা, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, জর্ডানের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইবনে আল হুসাইন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গেয়ান হে, ইরাণের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
দ্বিতীয় দফায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা বক্তব্য রাখেন। তবে শুরু থেকেই সবার নজর ছিল পুতিন ও ওবামার বক্তব্যের দিকে।
বিশ্বের ক্ষমতাধর দুই রাষ্ট্র নায়ক ওবামা-পুতিনের এই মুখোমুখি অবস্থান ও জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট ওবামার রাশিয়ার সরাসরি সমালোচনা আগামী দিনে দু’দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রতিক্ষণ/এডি/ডিএইচ