জার্সি ডেভিল রহস্য
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
নখর বা খুরওয়ালা রহস্যময় এক উড়ন্ত প্রাণীর নাম জার্সি ডেভিল। দক্ষিণ নিউ জার্সিতে এই প্রাণীকে নিয়ে প্রচলিত আছে প্রচুর লোককাহিনী। জার্সি ডেভিল মানে ‘জার্সির প্রেতাত্মা’।
জার্সি ডেভিল নিয়ে যতগুলো লোককাহিনী প্রচলিত, তার মধ্যে জনপ্রিয়টি হচ্ছে এ রকম- ইংল্যান্ডের ডেবোরাহ স্মিথ নামের একনারী বিয়ের পর যুক্তরাষ্টের নিউ জার্সিতে অভিবাসী হন। তার স্বামীর নাম ছিল লিডস। এটা আঠারো শতকের ঘটনা। লিডসের ছিল ১২টি সন্তান। ১৩তম সন্তান তখন স্মিথের গর্ভে এসে নড়াচড়া করছে।
তিনি আতঙ্কিত হলেন। তার মনে সন্দেহ, তিনি পেটে এক প্রেতাত্মা বহন করছেন! তার সে আশংকা সত্যি হলো। শিশুটির জন্মের পর দেখা গেল এটি সত্যিই এক দানব, যার নখরযুক্ত খুর আছে, দেখতে উদ্ভট এবং লম্বা একটা লেজও আছে। জন্মের পরই এটি লিডসের ১২ সন্তানকে খেয়ে ফেলল এবং দানবীয় আধিপত্য বিস্তার করে বাড়ির চিমনি দিয়ে পালিয়ে গেল। কাহিনীটি ১৯৯৮ সালের ২৬ এপ্রিল নিউইয়র্ক টাইমসে ছাপানো হয়।
একাধিক ব্যক্তি ‘জার্সি ডেভিল’ দেখেছেন বলে দাবি করেন। তবে কারো বর্ণনার সঙ্গে কারোটি মেলে না। কেউ বলেন, এটি বিশাল বড় এক সারসের মতো আর আগুনের পাখির মতো আগুন নিক্ষেপ করতে পারে। তবে মুখটা ভেড়ার মতো, বাঁকানো শিং আছে, পেছনের পায়ের চেয়ে সামনের পা ছোট আর গলাটা অনেক লম্বা। উচ্চতা তিন ফুট, পুরো শরীর কালো লোমে ঢাকা, হাত-পা বাঁদরের মতো, মুখ কুকুরের মতো, পায়ে নখর আছে এবং এক ফুট লম্বা একটি লেজ আছে।’
এই অদ্ভুত জন্তু দর্শনের ঘটনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ফিলাডেলফিয়া চিড়িয়াখানা ঘোষণা করেছিল, জার্সি ডেভিল ধরে দিতে পারলে ১০ হাজার ডলার পুরষ্কার দেওয়া হবে; কিন্তু কেউ এটি ধরতে পারেনি। কারণ কথিত এ প্রাণী হঠাৎ উদয় হয় এবং হঠাৎ মিলিয়ে যায়। ১৯২৭ সাল পর্যন্ত জার্সি ডেভিল আর দেখা যায়নি।
সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে নিউ জার্সিতে জার্সি ডেভিলের মতো প্রাণী নাকি অনেকে দেখেছিল। সে সময় জার্সি ডেভিলকে ধরিয়ে দিতে পারলে ১ লাখ ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করেছিল এক বিখ্যাত সার্কাসের দল।
আজ পর্যন্ত জার্সি ডেভিলের অস্তিত্ব সম্পর্কে কোনো কূলকিনারা হয়নি। এই আধুনিক যুগে বাস করেও আমরা জার্সি ডেভিলকে এক কিংবদন্তী ছাড়া আর কীইবা ভাবতে পারি? জার্সি ডেভিল সত্যিই যদি কোনোদিন দেখা দেয়! এছাড়াও জার্সি ডেভিল সম্পর্কে ইউকিপিডিয়াতে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। নিম্নে ইউকিপিডিয়ার লিংকটি দেওয়া হলো।
https://en.wikipedia.org/wiki/Jersey_Devil
প্রতিক্ষণ/এডি/বিএ