তিন দশকে ইউরোপে ভয়াবহ সাত হামলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে হামলায় কমপক্ষে ১৫৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো ২০০ জন। এর মধ্যে ৮০ জনের অবস্থা গুরুতর। শুক্রবার রাতে প্রায় একই সময়ে ছয়টি স্থানে সমন্বিত বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এই হামলাকে গত কয়েক দশকের মধ্যে ইউরোপের দ্বিতীয় ভয়াবহ বলা হচ্ছে। ভয়াবহতম হামলাটি ছিল ২০০৪ সালে মাদ্রিদে ট্রেনে বোমাবর্ষণ।
তিন দশকে ইউরোপে ভয়াবহ ৭টি হামলাঃ
এক. ( স্পেন , ১১ মার্চ-২০০৪ সাল )
মাদ্রিদে চারটি কমিউটার ট্রেনে বোমা হামলা হয়। এই ঘটনায় ১৯১ জন নিহত ও প্রায় দুই হাজার মানুষ আহত হন। আল-কায়েদাপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী ওই হামলার দায় স্বীকার করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে অংশ নেওয়াকে হামলার কারণ হিসেবে জানায়। আর হামলার সন্দেহভাজন সাতজন ৩ এপ্রিল অ্যাপার্টমেন্টে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিতে আত্মহত্যা করে। এতে এক পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন।
দুই ( ইতালি, ২ আগস্ট-১৯৮০ সাল )
ইতালির বোলোনগা রেলওয়ে স্টেশনের একটি বিশ্রামকক্ষে বোমা হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় ৮৫ নিহত ও ২০০ জন আহত হন। উগ্র ডানপন্থী গ্রুপের দুই সদস্যকে এই হামলার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে হামলাকারীকে চিহ্নিত করা যায়নি।
তিন. ( নরওয়ে , ২২ জুলাই- ২০১১, সাল )
নরওয়েতে একটি সরকারি ভবনের কাছে বোমা মেরে আট ব্যক্তিকে হত্যা করেন উগ্র ডানপন্থী আন্দ্রেস ব্রেইভিক। পরে একটি দ্বীপে গুলি চালিয়ে ৬৯ জনকে হত্যা করেন তিনি। ২০১২ সালের আগস্টে তাঁকে ২১ বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে সমাজের প্রতি হুমকি মনে হলে তাঁর কারাদণ্ড বাড়তে পারে।
চার. ( যুক্তরাজ্য , ৭ জুলাই-২০০৫ সাল )
দিনের ব্যস্ত সময়ে তিনটি আন্ডারগ্রাউন্ড ও একটি বাসে আত্মঘাতী হামলা চলে। ওই ঘটনায় ৫৬ জন নিহত এবং ৭০০ জন আহত হন। আল-কায়েদা ওই হামলার দায় স্বীকার করে।
পাঁচ. ( স্পেন , ১৯ জুন-১৯৮৭ সাল )
স্পেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইটিএ বার্সেলোনার একটি শপিং সেন্টারের পার্কিংয়ে গাড়িবোমা হামলা চালায়। এ ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ৪৫ জন আহন হন।
উত্তর আয়ারল্যান্ডের ওমাগ শহরে গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ২৯ জন নিহত এবং ২২০ জন আহত হয়। আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি (আইআরএ) হামলার দায় স্বীকার করে।
সাত . ( ফ্রান্স, ৭ ও ৯ জানুয়ারি-২০১৫ সাল )
চলতি বছরের শুরুতে ৭ থেকে ৯ জানুয়ারি প্যারিসের কয়েকটি স্থানে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রথম হামলাটি হয় শার্লি এবদো নামক ব্যঙ্গাত্মক সাময়িকীর কার্যালয়ে। বন্দুকধারীদের গুলিতে শার্লি এবদোর কর্মী ও সাংবাদিকসহ কয়েকজন নিহত হন। এই ঘটনার জের চলে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। জিম্মি নাটকসহ দুদিনের ঘটনায় ১৯ জন নিহত হন।
তথ্যসূত্র: এএফপি