দুই দাপুটে অফিস সহকারীকে শোকজ
অবশেষে শোকজ করা হয়েছে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের দুই দাপুটে অফিস সহকারীকে। তাদের মধ্যে একজন হলেন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী বিমল কান্তি চাকমা ও অপরজন উচ্চমান অফিস সহকারী বিজয় কুমার বড়ুয়া। তাদের শোকজ প্রাপ্তির সাত কার্য দিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: মামুন কবীর শোকজের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর মৌখিক নির্দেশে তাদের শোকজ করা হয়েছে।
শোকজ সন্তোষজনক না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পক্ষান্তরে শিক্ষক নেতাদের দাবী, শুধু শোকজ করে চিঠি চালাচালি করে সময় নষ্ট করলে হবে না। দুই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলীসহ কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক আশা প্রিয় ত্রিপুরা সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী বিমল কান্তি চাকমা ও অপরজন উচ্চমান অফিস সহকারী বিজয় কুমার বড়ুয়া দূর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র গণমাধ্যমে তুলে ধরায় সাংবাদিকের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ দুই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলীসহ কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় আমরা প্রয়োজনে মাঠে নামবো। বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত. গত ৩রা মার্চ বিভিন্ন জাতীয় আঞ্চলিক দৈনিক এবং অনলাইনে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী বিমল কান্তি চাকমা ও উচ্চমান অফিস সহকারী বিজয় কুমার বড়ুয়ার বিরুদ্ধে সীমাহীন ঘুষ, দূর্নীতি, দায়িত্বে অবহেলা বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর নজড়ে আছে।
তিনি এক অভিভাবক সমাবেশে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের যে সকল অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী শিক্ষকদের জিম্মি করে অর্থ আদায় করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিদের্শ দেন।
অভিযোগ রয়েছে, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী বিমল কান্তি চাকমা সীমাহীন হয়রানীর শিকার হচ্ছেন, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা প্রায় চার শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা ও দপ্তরিরা। বিমল চাকমাকে উৎকোচ দেওয়ার পরও অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকুরি বহি: হাল নাগাদ করা হয়নি। ফলে তারা শান্তি বিনোদন ভাতা ও ব্যক্তিগত বেতনসহ বিভিন্ন ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি জাতীয় বেতন-স্কেল ঘোষনা হলে বিমল চাকমা উৎকোচের জন্য নানা অজুহাত দেখিয়ে সদর উপজেলার প্রায় চার শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকুরি বহি: ফেলে রাখেন। শিক্ষক নেতারা তাকে সহযোগিতা করতে চাইলেও বিমল কান্তি চাকমা অসহযোগিতার কারণে সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষনার সদর উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরিদের চাকুরি বহি: হাল নাগাদ করতে বিমল কান্তি চাকমাকে সাড়ে সাত হাজার উৎকোচ দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন,খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক আশা প্রিয় ত্রিপুরা জানান।
অপরদিকে একই অফিসের উচ্চমান সহকারী বিজয় কুমার বড়ুয়ার বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিজয় কুমার বড়ুয়া প্রতিদিন দুপুরের পর অফিস ত্যাগ করেন। এর পর তিনি আর অফিসে আসেন না।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি একটি আন-রেজি: সংগঠনের সাথে জড়িত। এ সংগঠনের নামে প্রতি বছর তিনি বৃত্তি দেওয়ার নাম করে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দেড়শ টাকা করে চাঁদা আদায় করে থাকেন। পরবর্তীতে হাতে গুনা কয়েক জনকে নাম মাত্র পুরস্কার দিয়ে মোটা অংকের টাকা ভাগ-ভাটোয়ারা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি