ধনেপাতার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

প্রকাশঃ ডিসেম্বর ২০, ২০১৫ সময়ঃ ৩:২১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:২১ অপরাহ্ণ

5-corianderযেকোন ভর্তার সাথে ধনেপাতা যেন সোনায়- সোহাগা। ধনেপাতা খাদ্যের স্বাদ আর ঘ্রাণ বাড়াতে যেমন পটু তেমনি খাবারে রুচি ফিরিয়ে আনতেও ওস্তাদ। এছাড়াও পরিমাণ মতো ধনেপাতা খেলে নানা ধরনের রোগ দূর হয়। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি কথা হলো, এই সুপরিচিত খাবারটিতে নানান ঔষধি গুণাগুণের পাশাপাশি অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিদ্যমান। আর তখন সাধের ধনে পাতা হয়ে ওঠে বিষাদের। তো চলুন জানা যাক ধনে পাতার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

* লিভারের ক্ষতিসাধন:

অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এছাড়াও এটাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে কিন্তু দেহের মাঝে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।

* নিম্ন রক্তচাপ:

অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে হৃৎপিন্ডের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়। যার ফলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি হয়। বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে  ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু তাই বলে এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নিম্ন রক্তচাপ দেখা দিতে পারে। এছাড়া এটি হালকা মাথাব্যথারও উদ্রেক করতে পারে।

* পেট খারাপ:

স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খেলে পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে । একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, এক সপ্তাহে ২০০ গ্রাম ধনেপাতা খেলে গ্যাসের ব্যথা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা, বমি হওয়া এমনকি পাতলা পায়খানা হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।

* ডায়রিয়া:

ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় কিন্তু এটি বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়া এর ফলে ডিহাইড্রেশন হয় যার ফলে ডায়রিয়ার সমস্যাটি হতেই থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত।

* নিঃশ্বাসের সমস্যা:

আপনি যদি শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে থাকেন, তাহলে ধনেপাতা না খাওয়াই উত্তম। কেননা ধনেপাতা শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা করে এবং এর ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে। ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট ছোট নিশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।

* বুকে ব্যথা:eryfoe4

অতিরিক্ত ধনেপাতা আহারে বুকে ব্যথার মত জটিল সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না তা দীর্ঘস্থায়ীও হয়ে থাকে। এজন্য এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম করে এই ধনেপাতা খাওয়াই ভালো।

* ত্বকের সংবেদনশীলতা:

সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে ত্বক ভিটামিন কে থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকের ক্যান্সার প্রবণতাও তৈরি করে।

* অ্যালার্জীর সমস্যা:

ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে । কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে আর এর ফলে অ্যালার্জী হতে পারে।

* প্রদাহ:

অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার আরেকটি বিশেষ পার্শ্ব প্রতক্রিয়া হল মুখে প্রদাহ হওয়া। এই ঔষধিটির বিভিন্ন এসিডিক উপাদান যেটি আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এর ফলে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হয়ে থাকে।  সারা মুখ লাল হয়েও যায়।

* ভ্রূণের ক্ষতি:

গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে যার ফলে মহিলাদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা লোপ পায় এবং বাচ্চা ধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।

প্রতিক্ষণ/এডি/জেবিএম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G