ধর্মের দোহাই দিয়ে সন্ত্রাসবাদের কথা বলা হয়-তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আজ বলেছেন, ‘ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ সম্পর্কে বিশ্ব গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সঠিক প্রচারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তুরস্কের ইস্তাম্বুুলে শনিবার দুপুরে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থাভুক্ত (অর্গানাইজেশন অভ ইসলামিক কো-অপারেশন-ওআইসি) দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীদের দ্বাদশ সম্মেলন ইসলামিক কনফারেন্স অব ইনফরমেশন মিনিস্টার্স (আইসিআইএম)- এ বাংলাদেশের পক্ষে তার বক্তৃতায় মন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামের মূলমন্ত্র যে শান্তি, সেটা এবং ধর্মের দোহাই দিয়ে যে সন্ত্রাসবাদের কথা বলা হয়, সেটা যে ইসলাম সমর্থন করে না, তা বিশ্বজনের কাছে তুলে ধরতে ওআইসি ও তার সদস্য দেশগুলো বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে পারে।’
তুরস্কের যোগাযোগ অধিদপ্তরের (ডিরেক্টরেট অভ কমিউনিকেশন্স) প্রেসিডেন্ট ফাহরেতিন আলতুনের সভাপতিত্বে ওআইসি মহাসচিব হুসেইন ব্রাহিম তাহা এবং সদস্য দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীরা ‘তথ্যবিকৃতি ও ইসলামভীতি প্রশমন’ (কমব্যাটিং ডিজইনফরমেশন এন্ড ইসলামোফোবিয়া) প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
ওআইসি’র সামনে বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা ও জঙ্গিবাদ দমনের উদাহরণ তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশে যেমন শান্তিপূর্ণভাবে সবার নিজ নিজ ধর্মপালনের পরিবেশ বজায় রয়েছে, তেমনি ধর্মকে কেউ যাতে জঙ্গিবাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে শূণ্যসহিষ্ণুতার নীতি নিয়েছে সরকার। ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও মানবতার খাতিরে ১১ লাখের বেশি মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দার ভেতরেও রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে সরকার। এটি নিয়ে অনেক সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়ে থাকে। কিন্তু আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে তাদের নিজের দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান এবং তা যত দ্রুত হয়, ততই সকলের জন্য মঙ্গল।’
সম্মেলনে ফিলিস্তিন প্রসঙ্গেও দেশের সুস্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। ফিলিস্তিনিদের প্রতি দেশের পূর্ণ সমর্থন পুণর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ মনে করে, স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনই এ বিষয়ে একমাত্র সমাধান। ওআইসি সদস্যদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আশা করি, কোনো দেশের জাতীয় কোনো ইস্যু স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন থেকে আমাদেরকে বিচ্যুত করতে পারবে না।
করোনা মহামারি ও বিশ্বমন্দার মধ্যেও বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, করোনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ঘোষিত ২৩ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে এবং মহামারির মধ্যেও আমরা ২০২১ সালে ৬.৯৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি যা চলতি বছর ৭.২৫ শতাংশে দাঁড়াবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশা করছেন।
সম্মেলন শেষে আগামীকাল দেশের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রীর ইস্তানবুল ত্যাগ করার কথা। সম্মেলনের সিনিয়র অফিসিয়ালস সভায় যোগদানকারী মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ ফারুক আহমেদ মন্ত্রীর সাথে রয়েছেন।
সূত্র : বাসস