ধ্বংসস্তূপ থেকে ৮২ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নেপালে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হওয়া একটি হোটেলের ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে ৮২ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে এক ব্যক্তিকে। তিন দিনেরও বেশি সময় ধরে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা অবস্থায় নিজের প্রস্রাব খেয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়ার এই ব্যক্তির নাম রিশি খানাল। বয়স ২৭ বছর। শনিবার ভূমিকম্পের আগের মুহূর্তে কাঠমান্ডুর একটি হোটেলে খাওয়া শেষ করেন রিশি খানাল। এর পর হোটেল থেকে বের হওয়ার জন্য নেমে আসছিলেন সিঁড়ি বেয়ে। দ্বিতীয় তলায় সিঁড়ি দিয়ে নামার মুহূর্তে হঠাৎ সব কিছু গুঁড়িয়ে যেতে শুরু করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার পা আকটে যায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে। আর বের হতে পারেননি। এ অবস্থায়ই কেটে যায় ৮২ ঘণ্টা।
উদ্ধার হওয়ার পর বুধবার হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বার্তা সংস্থা এপিকে রিশি খানাল বলেন, ‘বাঁচার কিছু আশা ছিল কিন্তু গতকাল থেকে আশা ছেড়ে দেই। আমার নখগুলো সাদা হয়ে যায় এবং ঠোঁট থেঁতলে যায়…আমার মনে হচ্ছিল, কেউ আমাকে বাঁচাতে আসছে না নিশ্চয়ই। আমি নিশ্চিত হই, মরতে যাচ্ছি আমি।’ বার্তা সংস্থার সঙ্গে কথা বলার সময় তার পাশে ছিল তার পরিবারের সদস্যরা।
৮২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় রিশি খানালের চারপাশে ছিল মৃতদেহ, যেগুলো পঁচা শুরু করেছিল। লাশের উৎকট গন্ধে দম হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল তার। জীনব তাকে ছেড়ে যায়নি! বুধবার ফ্রান্সের একটি উদ্ধারকারী দল গুঁড়িয়ে যাওয়া ওই হোটেলে উদ্ধারাভিযান চালাতে গিয়ে রিশি খানালের সন্ধান পায় এবং তাকে উদ্ধার করে।
রিশি খানাল বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপ থেকে কোনো শব্দ বাইরে যাচ্ছিল না এবং ভেতরে আসেনি কোনো শব্দ। ধ্বংসস্তূপের ওপরে ধড়াম ধড়াম শব্দ শুনতে পেয়ে আমি আশান্বিত হই এবং অবশেষে কেউ এলেন আমাকে উদ্ধার করতে। আমি কিছুই খাইনি বা পান করার মতোও কিছু ছিল না। বাধ্য হয়ে নিজের প্রস্রাব পানে বাধ্য হই আমি।’
‘আমি ভালো বোধ করছি এবং আমি কৃতজ্ঞ।’ এতটুকু বলার পরই তাকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।
নেপালে শনিবার ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি মানুষ। একই ভূমিকম্পে ভারত, তিব্বত ও বাংলাদেশেও বেশ কিছু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/এআই