নবাব বাড়ির সাচি পান
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকার বহু ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে নবাব বাড়ির সাচি পানের কথা না বললেই নয়। নবাব বাড়ির সাচি পান এতোটাই বিখ্যাত যে এই পানের সুনাম দেশ বিদেশ সর্বত্র জুড়ে রয়েছে। পান তো বাঙ্গালীর পছন্দের তালিকায় রয়েছেই সেই সাথে অন্যান্য এলাকার লোকজনও পান খেতে খুব একটা অপছন্দ করে না। আর সেই পান যদি হয় নবাব বাড়ির সাচি পান তাহলে তো কথাই নেই।
দেশের বাহিরের মানুষের কাছেও নবাব বাড়ির সাচি পান এতোটাই পছন্দনীয় যে একবারের জন্য ঢাকায় আসলেও তারা নবাব বাড়ির সাচি পানের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে চায় না। আর একবার খাবার পর তারা স্বাদে এতোটাই মজা পায় যে যাবার সময়ও ডালা ভর্তি করে নিয়ে যায় তাদের পরিবার পরিজন এবং বন্ধু বান্ধব ও পাড়া প্রতিবেশীদের জন্য।
একদম ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে আজ অব্দি সফলভাবে এবং সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছে নবাব বাড়ির সাচি পান। শুরুর দিকে ব্রিটিশ আমলে নবাব বাড়ির সাচি পান নবাবদের মহলে ডালায় করে সাজিয়ে পাঠানো হতো। এর ফাঁকে হঠাৎ মাঝে মধ্যে দু একটা পান বাহিরের লোকজনের কাছেও বিক্রি করা হতো। সেই থেকেই একজন দুজন করে আস্তে আস্তে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে নবাব বাড়ির সাচি পানের সুনাম।
এভাবেই প্রচার প্রসারনার মাধ্যমে নবাব বাড়ির সাচি পান সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠে। আর সেই সাথে দিন দিন বাড়তে থাকে সাচি পানের চাহিদা।
যেকোনো উৎসব অনুষ্ঠানে নবাব বাড়ির সাচি পানের কদর বেড়ে যায় আরও অনেক বেশি। বিশেষ করে বিয়ে বাড়িতে থাকে সাচি পানের ব্যাপক চাহিদা।
প্রায় তিন পুরুষ ধরে খুবই দক্ষতার সাথে পান বানাচ্ছেন নবাব বাড়ির সাচি পানের জনকেরা। আজ পর্যন্ত পান মসলার মান রেখেছেন একই রকম। উনারা কোন সাধারণ পান ব্যবহার করেন না। তারা ব্যবহার করেন বিক্রমপুরের বিখ্যাত সাচি পান। এই পানের স্বাদ অন্য কোন সাধারণ পানের মতো ঝাল স্বাদের নয়।
সাচি পানের নিজস্ব গুনাগুণ এবং ব্যাপক চাহিদার জন্য এই পান পাকিস্তানেও বিপুল পরিমাণে রপ্তানি করা হয়। নবাব বাড়ির একটি বিশেষত্ব হলো এই সাচি পানে ব্যবহিত হয় আগুনে ভেজে নেয়া সুপারি। সুপারি আগুনে ভেজে নেয়ার ফলে এই সুপারি খেলে মাথা ঝিম ঝিম করে না।
নবাব বাড়ির সাচি পান ঢাকার খাবারের মধ্যে অন্যতম। এই পান ঢাকাইয়া ঐতিহ্য এবং সুনাম বহন করে চলছে প্রতিনিয়ত। পছন্দনীয় এই নবাব বাড়ির সাচি পানের দামও খুব একটা বেশি নয়। নবাব বাড়ির সাচি পান শুরু থেকেই এর গুণে, মানে, স্বাদে বিখ্যাত এবং সুপরিচিত।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফজে