টি২০ বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে বল করতে নেমে বাংলাদেশ শুরুটা ভাল কিছু করার ইঙ্গিত দিল। ১ উইকেটের পতনও ঘটালো। কিন্তু এরপর যেন নিজেরাই নিজেদের চিনতে পারছিল না। ৫ ওভার শেষে প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা স্কোর বোর্ডে জমা করে ৫৮টি রান। ১০ ওভারে ৯১/১। ২০ ওভারে ২০৫ রানের মধ্যে ১৩০টি রানই এসেছে বাউন্ডারি আর ছক্কা থেকে!
বোঝাই যাচ্ছিল কি যাচ্ছে বাংলাদেশী বোলারদের উপর দিয়ে। আফ্রিকানদের ১৬৩ রানের পার্টনারশীপ টি২০ বিশ্বকাপে এখন সেরা রেকর্ড। নিম্নমানের বোলিংয়ের বিপক্ষে ইতিহাস রচনা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সঙ্গে রুসোর টি২০ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরিটা এবারের আসরের বোনাস রেকর্ড বলা যায়।
কোন ভাবেই সামাল দেয়া সম্ভব হয়নি আফ্রিকান ডি কুক আর রুসোকে। এ দুই ব্যাটারের ব্যাটে ভর দিয়ে আফ্রিকা দ্রুত থেকে দ্রুত বা ঝড়ো গতিতে রান জমা করে। ২০ ওভার শেষে ২০৫/৫। পেসার তাসকিন আর স্পিনার মিরাজকে যেভাবে মেরেছে ডি কুক আর রুসো, তাতে মনে হয়নি মিরাজ-তাসকিন বিশ্বকাপে খেলা একটি দলের বোলার। ছক্কা আর বাউন্ডারি গুলো মারার সময় কোন সুযোগই পায়নি ফিল্ডার। পাওয়ার হিট কাকে বলে আফ্রিকান দুই ব্যাটার যেন সাকিবদের শেখাচ্ছে।
আর বোলিংটা পাড়া-মহল্লার লেভেলে নামিয়ে ৫ ওভারের ৩০ বলে আফ্রিকানরা মেরেছে ৫টি বাউন্ডারি আর ৪টি বিশাল ছক্কার মার। এর মানে ৫ বাউন্ডারিতে ২০ রান আর ৪ ছক্কায় ২৪ রান = ৪৪ রান তো এখানেই নিয়ে নিয়েছে!
তাসকিন ২ ওভারে ২৩ রান ১ উইকেট আর মিরাজ ২ ওভারে কোন উইকেট ছাড়া ২৪ দিয়েছেন! এটিই কি তাহলে আন্তর্জাতিক মানের বোলিং! প্রশ্নটা করা যেতেই পারে।
আফ্রিকানদের স্কোর ৫.৩ ওভারে ৬০/১। এরপরই বৃষ্টির হানায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হয় কিছুক্ষণ পরই। এরপর যেন আরো মারকুটে রূপে হাজির হলের দুই আফ্রিকান ব্যাটার। ১০ ওভারেই সংগ্রহ করে ৯১ রান। আর ১১ ওভার শেষে ১১২/১!
এরই মধ্যে ৬ বোলার ব্যবহার হয়ে গেছে। যা মধ্যে সাকিব ১ ওভার বল করে ২১ রান দিয়ে সরে যেতে বাধ্য হলেন। ১৩ ওভার শেষ ওভার আগেই আফ্রিকান দ্বিতীয় জুটির দুই ব্যাটারের টি২০ ফিফটির স্বাদ নেয়া হয়ে গেছে। ১৪ ওভারে যখন স্কোর ১৬০/১ হয়ে গেছে তখন বুঝতে বাকী থাকে না স্কোর ২০০-এর বেশি হতে পারে।
মজার ঘটনা, দীর্ঘ সময় ধরে ওভার করতে করতে ক্লান্ত বোলাররা। অথচ ১৪ ওভারের ৪ বলে ডি কুক ৫৯ রানে ক্যাচ দিলেন, কিন্তু সেটা হাতে নিয়ে মাটিতে ফেলে দিলেন ফিল্ডার হাসান মাহমুদ। তবে ৬৩ রান করে ক্যাচ দিলেন আফিফের বলে ফিল্ডার ছিলেন সাকিব। অন্যদিকে রুসো টি২০ ক্যারিয়ারে ২য় সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে গেলেন ৫২ বলেই!“ খেলেছেন ৭টি বাউন্ডারি আর ৭টি ছক্কা দিয়ে। ১০৯ রান করলেন ৫৬ বলে, সাকিবের বলে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিলেন মারকুটে রিল্লি। শেষ দিকের ব্যাটাররা বিশেষ কিছু করতে পারেনি।
৫ উইকেটের খরচায় বাংলাদেশের বোলারদের কাঁদিয়ে আফ্রিকানরা ২০ ওভারে জমা করে ২০৫ রান। তাতে ছিল ১৬টি বাউন্ডারি আর ছক্কার মার ১১টি! ৬৪ রান বাউন্ডারি থেকে এসেছে আর ৬৬ রান এসেছে ছক্কা থেকেই।