নির্বাচনের মাঠে গ্রেপ্তার আতঙ্ক

প্রকাশঃ নভেম্বর ১০, ২০১৫ সময়ঃ ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৫৪ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

pouroদরজায় কড়া নাড়ছে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন। দীর্ঘদিন পর নৌকা-ধানের শীষের লড়াই দেখার অপেক্ষা। বিএনপি’র পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, সরকারকে খালি মাঠে গোল দিতে দেয়া হবে না। মন্ত্রিসভার এক সদস্যও খেলার মাঠে স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপিকে। তবে ভোটের মাঠে বিরাজ করছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক।

ক্রমশ খালি হয়ে যাচ্ছে মাঠ। সারা দেশে চলছে ধরপাকড়। তিন দিনে গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৭শ’র বেশি।

সরকারের এক মন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, স্থিতিশীলতা ফেরাতেই এ অভিযান। চলতি বছরের শুরুর দিকে বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল ব্যাপক মাত্রায়। যে সহিংসতায় একশ’র বেশি মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়েছিল। ওই সময় বিএনপি-জামায়াতের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান অনেকে।

লন্ডনের দৈনিক গার্ডিয়ানের ভাষায়, ‘রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিএনপিকে প্রায় ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। একই হাল ইসলামপন্থি দল জামায়াতে ইসলামীরও।’ তবে ওই সময় গ্রেপ্তার বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ৯০ ভাগই পরে জামিনে মুক্ত হন। যদিও আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদের বেশির ভাগই এখনও প্রকাশ্যে আসতে পারেননি।
সরকার ও নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ার পর বিরোধী রাজনীতিতে যুক্ত স্থানীয় নেতারা জামিন নেয়ার চেষ্টা করেন। অনেকেই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তবে সম্প্রতি দেশে বিদেশী খুনসহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করা হয়। এরপরই সারা দেশে বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে নতুন করে অভিযান শুরু হয়। তবে চলতি সপ্তাহে অভিযানের তীব্রতা বেড়েছে। বিরোধীদলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, স্থানীয় নির্বাচনে যেন বিরোধীদলের নেতারা অংশ নিতে না পারেন সেজন্যই এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

এদিকে সারা দেশে বিশেষ অভিযান অব্যাহত রেখেছে যৌথবাহিনী। চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। নাশকতা ঠেকাতে শুক্রবার রাতে শুরু হয় এ অভিযান। প্রথম দুইদিনে গ্রেপ্তার করা হয় অন্তত ১২ শতাধিক। যাদের বেশির ভাগই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী ও সমর্থক। চলমান অভিযানের ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘণ্টায় আটকের এ সংখ্যা অন্তত ৩ শতাধিক। প্রতিদিনই সাঁড়াশি অভিযানে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন জেলা।

রোববার সন্ধ্যার পর থেকে সোমবার পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ধরপাকড় হয়েছে নোয়াখালী, বরিশাল, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া ও ঢাকার সাভারে। এর মধ্যে দিনাজপুরে ১২২ জন, নোয়াখালীতে ৯৬ জন, লক্ষ্মীপুরে ৫৫ জন, বরিশালে ৪৯ জন, সাতক্ষীরায় ৪৬ জন, চাঁপাই নবাবগঞ্জে ৪১ জন, কুষ্টিয়ায় ৩২ জন, ঢাকার সাভারে ২৭ জন, সিরাজগঞ্জে ৩৩ জন, ঝিনাইদহে ১৭ জন ও ধামরাই এবং নবাবগঞ্জে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন- বরিশাল মহানগর বিএনপি’র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুল, কুষ্টিয়া ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাকারিয়া হোসেন উৎপল, সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন রাজেশ, বেলকুচি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, পৌর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইনসাফ আলী ও উল্লাপাড়া উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি তৈয়ব আলী প্রমুখ।

এদিকে নাশকতার মামলায় হাজিরা দিতে গেলে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালত কারাগারে পাঠিয়েছে এলডিপি’র চার নেতাকে। তারা হলেন, গণতান্ত্রিক যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক আবু তাহের চেয়ারম্যান, চান্দিনা পৌর সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসেম, প্রভাষক তপন চন্দ্র দেবনাথ ও গণতান্ত্রিক ছাত্রদল চান্দিনা পৌর শাখার আহ্বায়ক তারেকুল ইসলাম বাবু।

প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G