পৃথিবীর রাষ্ট্রপতিদের সুন্দর সব বাসভবন

প্রকাশঃ আগস্ট ৮, ২০১৫ সময়ঃ ৮:২৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:৩৩ অপরাহ্ণ

ইমতিয়াজ হোসেন

পৃথিবীর প্রতিটা দেশই তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য দ্বারা নিজেদের কে বিশ্বের সামনে তুলে ধরে। এই স্বকীয়তা ফুটে ওঠে তাদের সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ডে। প্রতিটা দেশের ইতিহাস তাদের নির্মাণকে প্রভাবিত করে।  আজ আমাদের আলচনায় থাকবে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতিদের কিছু দৃষ্টিনন্দন বাসভবনের নির্মাণ শৈলী।

দ্য পিংক হাউসঃ আর্জেন্টিনা1

এই ভবনটি আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ারসে অবস্থিত। আর্জেন্টিনার বেশ কতগুলো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে ঘেরা এই রাষ্ট্রপতি ভবন। এর নির্মাণ শিল্প সত্যিই অবাক করার মত। ইংলিশ স্থপতি এডওয়ার্ড টেইলরের নির্মাণ শৈলীতে এটি ১৮৫৫ সালে নির্মাণ করা হয়। তিন তলা বিশিষ্ট অর্ধাচন্দ্রাকৃতির এই বাড়িটির ভেতর রয়েছে একটি সরকারি মিউজিয়াম, গ্যালারি ছাড়াও কমপক্ষে ৫০ টির মত স্টোর রুম। এই ভবনের প্রতিটি মূল রুমের নির্মাণ কৌশল খুবই চমকপ্রদ। প্রতিটি রুমের বাইরের ভাগে থাকে তিনটি প্রান্ত। ফলে প্রাকৃতিক আলো আর বাতাস প্রবেশের এক অনন্য চিত্র এখানে পাওয়া যাবে।

প্যালাসিও দ্য অ্যালভোরাদাঃ ব্রাজিল5

এই ভবন টি ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ার প্যারানোয়া লেকের প্রান্তে অবস্থিত। ব্রাজিলিয়ান স্থপতি অস্কার নেইমার এর নকশায় ১৯৫৭ হতে ১৯৫৮ সালের ভেতর ১৮.৪ মিলিয়ন ডলার ব্যায়ে এটি নির্মিত হয়। ৭৫ হাজার স্কয়ার ফুটের উপর নির্মিত তিন তলা এই ভবনটিতে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত একটি ধর্মীয় পিঠস্থান, হেলিপ্যাড ও মিউজিয়াম। তাছাড়া আরও রয়েছে লাইব্রেরি, চিকিৎসা কক্ষ, খেলার কক্ষ। আধুনিকতার সাথে ঐতিহ্যের মিলন হয়েছে ভবনটিতে।

হোয়াইট হাউসঃ যুক্তরাষ্ট্র

7হোয়াইট হাউস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির দাপ্তরিক বাসভবন। ওয়াশিংটন, ডি.সির পেনসিলভানিয়া এভিনিউয়ে অবস্থিত এই বাসভবনটি ১৭৯২ থেকে ১৮০০ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ভবনের স্থাপতি ছিলেন জেমস হোবান, তিনি আয়ারল্যান্ডের নাগরিক। এটি ১৭৯২ সালের ১৩ অক্টোবর স্থাপিত হয় এবং ১৮০০ সালে নির্মাণকাজ শেষ হয়। তারও চৌদ্দ বছর পর, ১৮১৪ সালে ব্রিটিশ সৈন্যরা আমেরিকা আক্রমণ করে ওয়াশিংটন শহরটি দখল করে এবং ৪ আগস্ট তারা হোয়াইট হাউসে আগুন লাগিয়ে দেয়। ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় প্রাসাদটি। বস্ত্তত, আরও তিনটি বছর লেগে যায় বাড়িটি নতুন করে তৈরি করতে, সঙ্গে বেশ কিছুটা পরিবর্ধনও সাধিত হয়। সম্ভবত, এই সময়েই পাকাপাকিভাবে এই প্রাসাদের রঙ আর ধুসর নয়, ধবধবে সাদাতে পরিণত করা হয়। সেই থেকে নাম হয় হোয়াইট হাউস। ভবনটির একতলায় ক্লোক রুম, চায়না রুম, কিচেন, লাইব্রেরি আর দোতলায় ফেডারেল স্টেটরুম ইত্যাদি অবস্থিত। আর রয়েছে বিখ্যাত ব্লু রুম আর রেড রুম। এখানে রাষ্ট্রপতিরা তাঁদের পরিবারবর্গ, সরকারি কর্মী ও এক সুশিক্ষিত রক্ষাবাহিনী নিয়ে বাস করেন। এটি শুধু রাষ্ট্রপতিদের বাসস্থানই নয়, অফিসও। প্রায় ১৮ একর জমিতে প্রসিদ্ধ বাগানসহ এক বিস্ময় এই ভবন।

ব্লু হাউসঃ দক্ষিণ কোরিয়া3

রিপাবলিক অব কোরিয়া বা দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি ভবন বা সরকারি বাসভবনের নাম হচ্ছে ব্লু হাউস। এটি দেশটির রাজধানি শিউলে অবস্থিত। এটি একটি জটিল স্থপত্তের উদাহরণ। এর নির্মাণ শৈলীতে কোরিয়ার ঐতিহ্য এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয়েছে। ৬২ একরের এই ভবনটিতে রয়েছে গণমাধ্যম কক্ষ, সাচিবিক কক্ষসহ রাষ্ট্রপতির বাসস্থান।

মিউলিয়াগেঃ মালদ্বীপ4
এটি দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষুদ্রতম দেশ মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন। ভবনটি দেশটির রাজধানি মালেতে অবস্থিত। দৃষ্টিনন্দন শৈলীর কারণে ভবনটি একটি টুরিস্ট ক্ষেত্র হিসেবে পরিনত হয়েছে। বৈচিত্রে ঘেরা দেশটির প্রতিটা সৃষ্টিতেই যেন রয়েছে আশীর্বাদ আর এটি তারই একটি নমুনা।

রাষ্ট্রপতি ভবনঃ ভারত6

ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন টি যেন আমাদের উপমহাদেশের হাজারও ইতিহাসের এক দণ্ডায়মান সাক্ষী। ৩২০ একর বিশিষ্ট ভবনটিতে রয়েছে ৩৪০ টি রুম। এই ভবনটির সামনে রয়েছে বিশাল আকৃতির একটি বাগান, ফাকা জায়গা, রাষ্ট্রপতি প্রহরী, অন্যান্য সরকারী কক্ষ। এই ভবনের মূল বিল্ডিংটিকে বলা হয় ভাইস রয় হাউস। পৃথিবীর সবথেকে বড় সরকার প্রধানের ভবন এই রাষ্ট্রপতি ভবনটি। ৭০০ মিলিয়ন ইট আর ৩০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুটের পাথর দ্বারা নির্মিত ভবনের নির্মাণ শৈলীর কোন তুলনা হয় না।

বিউলিভ প্যালেসঃ জার্মানি444
জার্মানির স্থপত্তের নিদর্শন আমাদের অতি পরিচিত। সেই নিদর্শনের একটি হল জার্মানির রাষ্ট্রপতির সরকারী বাসভবন। এটি জার্মানির রাজধানী বারলিনের তিয়েরগারটেন এ অবস্থিত। এটি স্প্রি রিভারের প্রান্তে বার্লিন টাউয়ারের ধার ঘেসে দাড়িয়ে আছে। এই ভবনটির নাম একটি ফ্রেঞ্চ ভাসা থেকে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ “সুন্দর দৃশ্য”।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/ ইম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G