প্রধানমন্ত্রীর আসাটা নিছকই ছলনা
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
পুত্রশোকে কাতর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর সহানুভূতি জানাতে আসার ঘটনাকে ছলনা বলে দাবি করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখলেও বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে প্রমাণ হয়েছে তার আসাটা ছিল নিছকই ছলনা। একটা প্রহসনের মহড়া মাত্র। এটা যেন কুমিরের কান্না।”
রোববার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রিজভী আহমেদ এসব কথা বলেন।
শনিবার দুপুরে যাত্রাবাড়ীতে বাসে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনায় খালেদা জিয়াসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
বিবৃতিতে রিজভী বলেন, “জবরদখলকারী ভোটারবিহীন সরকার হিংসার অমানবিকতার যে আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা হলো পুত্রশোকে কাতর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে। কতখানি নিষ্ঠুর ও বিবেকশুন্য হলে একটি সরকার এই জঘন্য অপকর্মটি করতে পারে তা দুনিয়াতে মনে হয় নজীরবিহীন। এই ভোটারবিহীন সরকার মনুষ্যত্বের সকল বৈশিষ্ট্যগুলোকে জলাঞ্জলি দিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “এই অবৈধ সরকার ও তাদের আন্দোলনের ফসল ১/১১ এর সরকারের মানসিক ও শারিরিক নির্যাতনে প্রায় সাড়ে সাত বছর ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন আরাফাত রহমান কোকো। ২০০৭ সালের মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের দিনই কোকোকে আটক করে। আটকের পর তার ওপর চালানো হয় অমানুষিক অত্যাচার। এই অত্যাচারেই গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত হন আরাফাত রহমান কোকো। এরপর আওয়ামী মহাজোট সরকার একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করতে থাকে কোকোর বিরুদ্ধে। মায়ের কাছ থেকে সন্তান ও সন্তানের পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। মানসিক ও শারিরিক নির্যাতনের ফলে অসুস্থতায় ভুগতে ভুগতে গতকাল আরাফাত রহমান কোকো মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।”
তিনি অভিযোগ করেন, “স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারকে ধারাবাহিকভাবে ধ্বংস করার একটি মাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে জিয়ার বহুদলীয় গণতন্ত্রকে উচ্ছেদ করে এক ব্যক্তির একক রাজত্ব চালিয়ে যাওয়ার পথে বাধা দূর করা।”
রিজভী আহমেদ বলেন, “কোকোর মৃত্যুতে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত করতে আসাটাকে আমরা ইতিবাচক অর্থেই গ্রহণ করেছিলাম। রাজনীতির বাইরে সামাজিক দায়িত্ববোধের তাগিদেই প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়াকে সমবেদনা জানাতে আসছেন বলে ধরে নিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী তার রাজনৈতিক বিরোধীদের গভীর শোকের সময়ও তাদের বিরুদ্ধে নিজের অন্তরের বিদ্বেষ-বিষ দূরীভূত করতে পারেননি। বেগম জিয়াকে কারাগারে বন্দী করার নীল নকশা তারা অনেক দিন ধরেই এঁটে আসছে। বেগম জিয়াকে দায়ী করে আটক করার জন্যই একের পর এক পেট্রোল বোমা মেরে নাশকতার ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বারবার বলা হয়েছে যে, সরকারি এজেন্টরাই এই নাশকতাগুলো করছে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে।”
সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভকে ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দিতে এসব হামলা করা হচ্ছে এমন দাবি করেন রিজভী আহমেদ।
তিনি দাবি করেন, “সরকারের নানা অপচেষ্টার পরও জনগণ এখন রাস্তায় নেমে এসেছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন গন্তব্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে জনগণের সম্মিলিত শক্তিতে অবরোধ-হরতাল অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে ।”
অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসনসহ সকল নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।একইসঙ্গে যাত্রাবাড়ীতে দুস্কৃতকারীদের পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনায় দায়িদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান রিজভী।
প্রতিক্ষণ /এডি /পলাশ