প্রাচীনকালের কিছু ভয়ংকর মারনাস্ত্র

প্রকাশঃ জুলাই ১, ২০১৫ সময়ঃ ৭:২৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৫৯ অপরাহ্ণ

মারনাস্ত্র,প্রাচীন,যুদ্ধ,চীন,তীর,তলোয়াড়

Achaemenian Persian Scythed War Chariotসৃষ্টির প্রায় শুরু থেকেই মানুষ  বিভিন্ন কারণে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করেছে, হতাহত করেছে একে অপরকে। সেই সময়কার যুদ্ধগুলোতে বর্তমান সময়ের মত অত্যাধুনিক অস্ত্র ছিল না। তবুও মানুষ নিজেদের স্বামর্থ্য অনুযায়ী মারনাস্ত্র ব্যবহার করত এবং সেই মারনাস্ত্রগুলোর উপর ভিত্তি করেই বর্তমান সময়ের অনেক অস্ত্র গড়ে উঠেছে।

আমাদের আজকের চিত্র-বিচিত্রে সেরকম কিছু প্রাচীন মারনাস্ত্রের কথা তুলে ধরা হলো।

কাস্তে রথ

শত্রু পক্ষের পদাতিক বাহিনীর জন্য এটি ছিল এক আতংকের নাম। Scythed Chariot এর বাঙলা করলে এর নামকরণ হত “কাস্তে রথ”। এই অস্ত্রে রথের চাকার মাঝ বরাবর ধারালো বাঁকানো কাস্তে লাগিয়ে দেওয়া হত । অস্ত্রটি চালানোর জন্য ব্যাবহৃত হত মোট চারটি ঘোড়া আর  রথে যাত্রী হিসেবে থাকত চালক সহ দু’জন যোদ্ধা।

এর মূলত ব্যবহৃত হতো  যুদ্ধে সম্মুখ ভাগের শত্রু বাহিনীর সৈনিকদের নিহত করে পিছনের পদাতিক বাহিনীর জন্য পথ তৈরি করে দেওয়ার জন্য এবং অস্ত্রটি তার কাজ বেশ ভালভাবেই করত।  Scythed Chariot এর সামনে যারা আসত তারা ঘোড়ার ধাক্কায় পাশে চলে গেলে বা কাস্তের আঘাতের পর বেঁচে গেলেও রথে থাকা সৈনিকদের অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যুবরণ করত।

o-CATAPULTআদি যুগের কামান ট্রেবুশেট

ট্রেবুশেট(Trebuchet) কে বলা যেতে পারে আদি যুগের কামান। এই Trebuchet এর আবিস্কার হয় চায়নাতে। অবশ্য পরবর্তিতে এর নকশায় আমুল পরিবর্তন এসেছে কিন্তু মূল কার্যপ্রনালী প্রতিটির ক্ষেত্রেই একই ছিল।

এটি সব থেকে বেশি জনপ্রিয়তা পায় ইউরোপিয়ানদের মাঝে। অস্ত্রটি ৬ শতকের দিকে ইউরোপে প্রথম আসে। তখন থেকেই বড় বড় কেল্লার দেয়াল গুড়িয়ে দিতে,  দেয়াল টপকে ভিতরে হামলা চালাতে ব্যাবহৃত হত এই Trebuchet। যদিও ইউরোপিয়ানরা এর নকশায় অনেক পরিবর্তন এনেছিল কিন্তু চাইনিজদের মত এত বেশি কার্যকর নকশা আর কেউ বানাতে সক্ষম হয়নি।

Chu-Ko-Nu_Crossbowরাইফেলের আদি পিতা চুকোনু

চুকোনু(Chu Ko Nu) হচ্ছে বর্তমান অটোমেটিক রাইফেলের আদি পিতা। এটি খুব কার্যকর এবং শত্রু পক্ষের জন্য বেশ ভয়ংকর এক অস্ত্র যা চায়নাতে আবিস্কার হয়েছিল  এবং চায়নাসহ ইউরোপের অনেক দেশে সর্বাধিক ব্যবহুত হয়েছে।

এই আড় ধনুকের (Crossbow) বৈশিষ্ট হল এতে এক সাথে অনেক গুলি তীর লাগানো যেত আর তা অতি দ্রুত ছোড়া সম্ভব ছিল। আসলে তীর না বলে বলা যেতে পারে তীরের ছোট ভাই।

কেননা এই Chu Ko Nu ব্যাবহৃত তীর গুলি অনেক ছোট ছিল অনেকটা স্নাইপারের গুলির সমান। এই Chu Ko Nu ১৫ সেকেন্ডে ১০টি তীর নিক্ষেপ করা সক্ষম ছিল। ১৮৯৪ থেকে ১৯৮৫ সালের দিকে চায়না এবং জাপানের মধ্যকার যুদ্ধেও এই Chu Ko Nu ব্যাবহার করা হয়েছিল।

কাতার

দেখতে যেমনই হোক না কেন কাতার কিন্তু বেশ ভয়ংকর অস্ত্র। এর উৎপত্তি ভারতে। দেখতে অনেকটা সাধারণ তলোয়ালের মত হলেও এটা একটু উদ্ভট আকৃতির হাতল ছিল। এর হাতলের মধ্যে একটা ট্রিগার আছে যেটাতে চাপ দেবার সাথে সাথে এর মধ্য থেকে আরো দুটি তলোয়ার বেড়িয়ে আসে যা কাছে থাকা শত্রুকে চমকিত করে দেয় আর ব্যবহারকারিকে আঘার হানার সুবিধা দেয়। Nest-of-Beesএছাড়াও এই কাতার  এতটাই ধারালো যে লৌহ বর্ম ভেদ করেও শত্রুকে মোক্ষম আঘাত হানতে সক্ষম।

মৌমাছির চাক

মৌমাছির চাক (Nest of Bees) নাম শুনেই নিশ্চই অবাক হয়ে যাচ্ছেন? এই নামের কিন্তু যতার্থতা রয়েছে। এই অস্ত্রটি খুবই সহজে বহন করা যায় আর খুবই কার্যকর।

এই অস্ত্রের ভিতরটা দেখতে অনেকটাই মৌমাছির চাকের মত। আর এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩২ টা তীর এক সাথে রাখা সম্ভব। আর পিছের হাতল ধরে টান দিলেই  তীরগুলি অটোমেটিক রাইফেলের গুলির মত ছুটে বের হতে থাকবে।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G