বাঘ, ভাল্লুক ও সিংহ ৩ বন্ধু !
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
হিংস্র প্রাণীরা সাধারণত শিকার করতেই বেশি পছন্দ করে। তবে কয়েকটি হিংস্র প্রাণীর মধ্যে যে বন্ধুত্ব হতে পারে তা এ পর্যন্ত কখনো দেখা যায়নি। এই যেমন ধরুন, বাঘ, ভাল্লুক ও সিংহের বন্ধুত্ব হতে পারে এমনটা চট করে বিশ্বাসই করা যায় না। প্রাণীজগতে এমন ঘটনা বিরল। তবে বনের হিংস্র প্রাণীরাও যে বন্ধু হতে পারে তা প্রথম জানা গেল শের খান, বালো এবং লিওদের দেখে।
মার্কিন কালো ভাল্লুক (বালু), আফ্রিকান সিংহ (লিও) এবং বাংলাদেশের রয়েল বেঙ্গল জাতের বাঘ (শের খান)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া, লুকাস গ্রোভ চিড়িয়াখানার নোয়া’স আর্ক রেসকিউ সেন্টারে এই তিনটি প্রাণী একই পরিবেষ্টনের মধ্যে বসবাস করে। ১৫ বছর ধরে বন্ধু ওরা।
এদের বয়স যখন এক বছরের কম তখন যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা অঙ্গরাজ্যের একটি বাড়ি থেকে ২০০১ সালে পুলিশ এই প্রাণীগুলোকে উদ্ধার করে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ‘নোয়া‘স আর্ক অ্যানিম্যাল শেল্টারে’ নিয়ে আসে। তখন থেকেই কর্তৃপক্ষ ওদের একসঙ্গে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। আর সেই থেকে বন্ধু ওরা।
নোয়া’স আর্কের সহকারী পরিচালক ড্যানি স্মিথ বলেন, আমরা তাদের আলাদা রাখতে পারতাম, কিন্তু সে সময় তারা একটি পরিবারের মতো এসেছিল। যে কারণে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তাদের একত্রে রাখারই সিদ্ধান্ত নেয়। আমাদের জানা মতে এটাই একমাত্র জায়গা যেখানে এই তিনটি হিংস্র পশুকে একত্রে রাখা সম্ভব হয়েছে। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে পর্যটকরা এদের বন্ধুত্বের সাক্ষী। এদের দেখলেই মনে হবে যেন তারা একই মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া তিন ভাই। তাদের এ বন্ধন এত বেশি শক্ত যে অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হলে তারা বন্ধুশূন্য হয়ে পড়বে।
তিনি আরো বলেন, বালোর সঙ্গে শের খানেরই বেশি ভাব। কারণ লিও দিনের বেশিটা সময় ঘুমিয়ে কাটাতেই পছন্দ করে। আমেরিকান এই কালো ভাল্লুক বাংলাদেশি বাঘের ঘাড়ে হাত দিয়ে এমনকি গৃহপালিত বেড়ালের মতো জিহ্বা দিয়ে চেটেও আদর করে, এ দৃশ্য দেখলে সত্যিই অদ্ভুত এবং যাদুর মতো মনে হয়।
আবার লিও ঘুম থেকে জাগলে ক্ষুধা পাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনজন খেলতে থাকে। তিন শিকারি প্রাণীরই অন্যকে হত্যা করার ক্ষমতা থাকলেও অাশ্চর্যজনকভাবে তারা একে অন্যের প্রতি খুবই সহনশীল আচরণ করে।
ডানি স্মিথ আরো বলেন, তারা একসঙ্গেই ঘুমায় বলে তাদের থাকার ঘরটি খুবই মজবুত করে তৈরি করা হয়েছে। থাকার ঘরের সঙ্গে আমরা একটি চৌবাচ্চার ব্যবস্থাও করেছি। কারণ, শের খান এবং বালো দুজনই পানিতে নামতে ভালোবাসে। শের খান একটু গম্ভীর প্রকৃতির, নড়াচড়া কম করতে পছন্দ অথচ বালো তাকে দক্ষ হাতে পরিচালানা করে ঠিক খেলার সঙ্গী বানিয়ে নেয়। এখন নোয়া’র আর্কই যেন তাদের বাড়ি হয়ে উঠেছে।
#লাইক ও শেয়ার দিয়ে প্রতিক্ষণের সাথে থাকুন।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি