ক্রীড়া ডেস্ক
কাতার বিশ্বকাপে শিরোপার দৌড়ে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানির নামই ঘুরেফিরে আসে বার বার। তবে চমক দেখাতে পারে ক্রোয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, উরুগুয়ে, সেনেগালের মতো দল। প্রতিটি বিশ্বকাপ আসরে এই দল গুলোর নাম ‘জায়েন্ট কিলার’ হিসেবে এসেছে বার বার। ভিন্ন ভিন্ন বিশ্বকাপ আসরে ভিন্ন সময়ে তার প্রমাণ রেখেছে এই জায়েন্ট কিলার খ্যাত দলগুলো। ২০২২ আসরের ডার্ক হর্স হিসেবে পরিচিতি এই দল শিরোপা জয় করতে না পারলেও; আসন্ন বিশ্বকাপে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জন্য অবশ্যই হুমকি।
সুইজারল্যান্ড:
ফ্রান্সকে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় করে ইউরোয় চমক দেখিয়েছিল সুইজারল্যান্ড। শেষ ৫ আসরের চারটিতেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত করা রেডক্রসরা অন্য যে কোনবারের তুলনায় এবার শক্তিশালী। অভিজ্ঞ গ্রানিত জাকা, জেরদান শাকিরিদের সঙ্গে ফর্মে থাকা ফ্যাভিয়ান শার, ম্যানুয়েল আকানজিরা জ্বলে উঠতে প্রস্তুত।
২০১৮ বিশ্বকাপ, কে ভেবেছিলো ফাইনাল খেলবে ক্রোয়েশিয়া। লুকা মদ্রিচের হাত ধরে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে ক্রোয়াটদের সেরা সাফল্য সেটাই। এর আগে অবশ্য প্রথম অংশ নিয়ে ৯৮ সালের সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠেছিল ইউরোপের দলটা।
মস্কোয় যেখানে শেষ হয়েছিলো সেখান থেকেই শুরু করার প্রত্যয় ক্রোয়েশিয়ার। তবে মারিও মানজুকিচ, ইভান রাকিটিচদের মত স্বপ্ন সারথীদের এবার পাচ্ছে না দলটা। নিজের শেষ বিশ্বকাপ রাঙাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখতে চান না লুকা মদ্রিচ। অভিজ্ঞ কোভাসিচ, প্যারিসিচ, ক্রামারিচদের সঙ্গে তরুণ জস্কো ভার্দিওল, জসিপ সুতালো, জসিপ স্ট্যানিসিচে ভরসা রাখতে চান কোচ।
উরুগুয়ে:
সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সোনালী অতীত পুঁজি উরুগুয়ের। নক আউট পর্বে নিয়মিত দুইবারের বিশ্বকাপ জয়ীরা পাচ্ছে না কোচ অস্কার তাবারেজকে। যার হাত ধরে ২০১০ এর সেমিফাইনাল খেলেছে লা সেলেস্তেরা। শেষ আসরে উঠেছিলো কোয়ার্টার ফাইনালে। দিয়েগো আলোনসো অধ্যায়ে নয় ম্যাচে সাত জয় উরুগুয়ের।
লুইস সুয়ারেজ, দিয়েগো গদিন, ফারনান্দো মুসলেরা, এডিনসন কাভানির মত তারকাদের বিদায়ী বিশ্বকাপে লাতিন আমেরিকার দলটার তুরুপের তাস দারউইন নুনেজ, ভেদেরিকো ভালভার্দের মত তরুন তুর্কীরা।
নেদারল্যান্ডস:
কিংবদন্তি রুদ খুলিত, ইয়োহান ক্রুইফদের হাত ধরে টোটাল ফুটবলের যে বিপ্লব এনেছিলো নেদারল্যান্ডস। সেই দলটাই গেলোবার বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পারেনি।
তবে এবারের চিত্রটা ভিন্ন তিনবারের ফাইনালিস্টদের জন্য। অবসরে যাওয়া কোচ লুই ফন হালকে ফিরিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে বিশ্বমঞ্চে পা রেখেছেন দ্যা অরেঞ্জ। যে যুদ্ধ করেছে ক্যানসারের সঙ্গেও। ডাচদের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন মেমফিস ডিপাই, ভার্জিল ফন ডাইক, ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং, ম্যাথায়াস ডি লিখট, নাথান আকেদের মত তারকারা।
সেনেগাল:
গ্রুপ এ তে ডাচদের প্রতিপক্ষ হিসেবে সেনেগালকে। প্রথমবারের মত আফ্রিকা কাপ অব নেশন্স জিতে যারা আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। দলটির সেরা সাফল্য ২০০২ এ প্রথমবার অংশ নিয়েই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা। দুই দশক পর এশিয়া মহাদেশে আয়োজিত দ্বিতীয় বিশ্বকাপে ২০ বছর আগের এল হাদজি ডিউফ এবং তার দলের সেই কীর্তির পুনরাবৃত্তি নিঃসন্দেহে করতে চাইবে আফ্রিকান দেশটি। দলটির তারকা আলিউ সিসে ৭ বছর ধরে কোচের ভূমিকায়। গোলরক্ষক এদুয়ার্দো মেন্দি, অধিনায়ক কালিদু কলিবালির মত হ্যাভিওয়েটরা অঘটনের জন্য প্রস্তুত।
ডেনমার্ক:
১০ ম্যাচে নয় জয় নিয়ে বাছাই পর্বে ইউরোর শেষ আসরে সেমিফাইনাল খেলা। তাছাড়া ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের জন্য এবার চোখ রাখতে হবে ডেনমার্কের দিকে। ষষ্ঠবারের মত বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায় থাকা ড্যানিশদের সেরা পারফরম্যান্স ১৯৯৮ আসর। সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিলো ডায়নামাইটসরা। এরিকসেন ছাড়াও ক্যাসপার স্মেইখেল, ক্যাসপার ডলবার্গ, মিকেল ড্যামগার্ড, থমাস ডিলানিদের হাত ধরে নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার মিশন স্ক্যান্ডিনেভিয়ানদের।