বেতনে টাকার বদলে মুরগীর বাচ্চা!
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
সারা মাস খাটাখাটনি করে মাস শেষে বেতন পেতে কার না ভালো লাগে! কিন্তু আপনাকে যদি বেতনে টাকার বদলে ধরিয়ে দেওয়া হয় মুরগীর বাচ্চা? আপনার নিশ্চয়ই ভালো লাগবে না। কিন্তু এমনটাই ঘটছে মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানের একটি শহরের স্কুলের শিক্ষকদের সাথে। বেতন হিসেবে নগদ অর্থের পরিবর্তে মুরগীর বাচ্চা দেওয়া হচ্ছে তাদের। দেশটির বেতার গণমাধ্যম রেডিও ওজোদিক তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায়।
উজবেকিস্তানের স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রদেশ কারকালপাকস্তান রিপাবলিকের শহর নুকুসে ঘটছে এ ঘটনা। শহরটির ব্যাংকগুলোতে অর্থ সংকট দেখা দেয়ায় নগদ অর্থের পরিবর্তে সদ্যোজাত মুরগীর বাচ্চা নিচ্ছেন স্কুল শিক্ষকরা।
এক শিক্ষক এ ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘গত বছর তারা বেতন হিসেবে আমাদের আলু, করলা এবং কুমড়া দিয়েছে। এই বছর আমাদের বেতনের পরিবর্তে মুরগীর সদ্যোজাত বাচ্চা নিতে বাধ্য করছে। আমাদের মুরগির বাচ্চা প্রয়োজন হলে অনেক কম দামে তা বাজার থেকে কিনতে পারি।’
আরেকটি সূত্র জানিয়ছে, বেতন হিসেবে উজবেকিস্তানের মুদ্রায় ৭০০ সোমের (১৯৫ টাকা) বিপরীতে একটি মুরগীর বাচ্চা দেয়া হচ্ছে একেকজন শিক্ষককে। অথচ তাদের স্থানীয় বাজারে এর মূল্য অর্ধেকের চেয়েও কম।
উল্লেখ্য, উজবেক সরকার স্থানীয় গণমাধ্যমকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে এবং যারা বিদেশি গণমাধ্যমে কথা বলতে চায় তাদেরও শাস্তি দিয়ে থাকে। যারা বাইরের দেশের গণমাধ্যমে কথা বলে তারা নাম প্রকাশ করে না।
গত কয়েক বছর ধরে নগদ অর্থের স্বল্পতায় ভুগছে উজবেকিস্তান। এর ফলে দেশটির সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের বেতন এবং অবসরকালীন ভাতা দিতে দেরি হচ্ছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে রাজধানী তাসখন্দের সরকারি কর্মচারীরা অভিযোগ করে, ব্যাংকে কোনো অর্থ না থাকায় গত দুই মাস ধরে তাদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি।
তবে সব জায়গার পরিস্থিতি একই রকম নয় বলে জানায় অনেকে। অনেকে একে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কারসাজি বলে মনে করছেন। একজন রসিকতা করে বলেন, ‘মুরগীর বাচ্চা দিলে সমস্যা কী? এটা দিয়ে স্যুপ বানিয়ে সকালের নাস্তা করা যায়, এটাকে দুপুরের খাবারে ফ্রাই করে খাওয়া যায় এমনকি রাতের খাবারেও খাওয়া যায়। অন্তত প্রচুর ভিটামিন পাওয়া যাবে।’
উল্লেখ্য, উজবেকিস্তান মধ্য এশিয়ার একটি মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র। ১৯২৪ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অধীনে উজবেক সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত ছিল দেশটি। ১৯৯১ সালে এটি স্বাধীনতা লাভ করে। তবে এখন পর্যন্ত সমাজতান্ত্রিক ভাবধারা পুরোপুরি কাটাতে পারেনি উজবেকিস্তান। রাষ্ট্র এবং অর্থ ব্যবস্থায় আছে সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া