ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ২ সন্তানকে হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা আর তা থেকে হতাশার কারণে রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীতে দুই সন্তানকে তাদের মা মাহফুজা মালেক জেসমিন হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
বৃহস্পতিবার উত্তরায় র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
তবে প্রথমে র্যাবের খুদে বার্তায় এই হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে মায়ের পরকীয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি উল্লেখ করেনি র্যাব।
মুফতি মাহমুদ খান জানান, সন্তানদের স্কুলের পরীক্ষার ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় থাকতেন মা মাহফুজা মালেক জেসমিন। তার ধারণা ছিল, তার সন্তানেরা বড় হয়ে কিছুই করতে পারবে না। মাহফুজা উচ্চশিক্ষিত। তিনি শিক্ষকতাও করেছেন। এ কারণে পড়াশোনার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। নিজ সন্তানদের বেলায় এ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি। প্রাথমিক তদন্তে এটিই হত্যার কারণ বলে মনে হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, ২৯ তারিখ (সোমবার) মেয়ে অরণীর গৃহশিক্ষিকা চলে যাবার পর বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ঘুমাতে যায় অরণী। সেসময় বাসায় দাদী, দুই ভাই-বোন ও মা মাহফুজা উপস্থিত ছিলেন। তখন আলভী আমান বেড রুমের বিছানাতেই ঘুমাচ্ছিল। মা মাহফুজাও ছেলের সঙ্গে একই বিছানায় শুয়েছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর প্রথমে অরণীকে ওড়না পেঁচিয়ে ধরেন। এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে উভয়েই বিছানা থেকে মেঝেতে পড়ে যায়। কিছু সময় পর মেয়ের শরীর নিস্তেজ হয়ে গেলে তার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি তার ছোট ছেলে আলভিকে খাটের উপর ঘুমন্ত অবস্থায় একইভাবে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন। দুই সন্তানের মৃত্যুর পর তিনি লাশ দুটির সামনে কিছু সময় ধরে কান্নাকাটি করেন।
তাদেরকে হত্যা করার পর নিজেকে বাঁচানোর জন্য প্রথমে ফোন করে স্বামী আমানউল্লাহকে মাহফুজা জানান, ‘ছেলে-মেয়ে কেমন যেন করছে।’ তখন স্বামীর বাসায় ফিরতে দেরি হবে জেনে তিনি তার মা ও নিজ বোন মিলাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। মাহফুজা তাদের বলেন, দুপুরে খাবার খেয়ে ঘুমানোর পর তার সন্তানরা আর ঘুম থেকে উঠেনি। আগের দিন রাতে আনা খাবারের বিষক্রিয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে সবাইকে জানান তিনি।
সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা ছাড়া অন্য কোনো কারণ ছিল কিনা জানতে চাইলে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এখন মামলা হবে এবং ঘটনার আরো তদন্ত হবে। এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে আরো কোনো কারণ ছিল কিনা সেটা তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি