মাথায় ভ্রূণ!

প্রকাশঃ মে ২৭, ২০১৫ সময়ঃ ৮:০০ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৭:০৩ অপরাহ্ণ

yaminikaranamচোখে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু সবই ঝাপসা দেখছিলেন তিনি। কানে কিছুই হয়নি। অথচ ঠিক মতো শুনতে পাচ্ছিলেন না। আর সেই সঙ্গে মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা। ২৬ বছরের মেয়ের কী হয়েছে, ভেবে কূল-কিনারা করতে পারছিলেন না বাবা-মা। মাথায় হাত চিকিৎসকদেরও।

স্ক্যান করে দেখা যায়, ভারতের ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী যামিনী কারানামের মাথার ভিতরে মটর দানার মতো কিছু একটা হয়েছে। চিকিৎসকেরা ধরেই নেন টিউমার। কিন্তু বিস্ময়ের তখনও বাকি ছিল। অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে ডাক্তাররা দেখেন, কোথায় টিউমার…? মটর দানার মতো অত ছোট জিনিসও নয়। বরং মাথার মধ্যে রয়েছে হাড়-দাঁত-চুল-সহ একটা অপরিণত ভ্রূণ! খবর আনন্দ বাজার।

যামিনীর ঝাপসা দেখা, খেতে না পারা, কানে কম শোনা— এ সবের সূত্রপাত হয়েছিল গত বছরের শেষের দিকে। হায়দরাবাদের তরুণীটিকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে কী করা যায়, ঠিক করে উঠতে পারছিলেন না আমেরিকার ডাক্তাররা। মাথার ঠিক মধ্যিখানে পিনিয়াল গ্ল্যান্ডে টিউমার হয়েছে। অস্ত্রোপচার করা বেশ ঝুঁকির। এ দিকে, যন্ত্রণা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

অস্ত্রোপচার করা ঠিক হবে কি না, এই দোলাচলের মধ্যে দিয়ে যেতে যেতেই হঠাৎ ডাক্তার এইচ শাহিনিয়ানের সন্ধান পায় যামিনীর পরিবার। যামিনীর মাথার পিছন দিকে একটা ছোট্ট গর্ত করেন শাহিনিয়ান। নিপুণ ভাবে একটা এন্ডোস্কোপ ঢুকিয়ে দেন খুলির মধ্যে। আর তার পরই চমক। শাহিনিয়ান দেখেন, টিউমার নয়। রয়েছে একটি ‘টেরাটোমা’ (এমন টিউমার, যার মধ্যে রয়েছে কলাস্তর বা টিস্যু। যা সাধারণত কোনও অঙ্গে থাকে)। চুল-দাঁত-হাড়ের মাংসপিণ্ড।

চিকিৎসকরা মনে করছেন, টেরাটোমাটি আসলে ওই তরুণীরই যমজ বোনের ভ্রূণ। মায়ের গর্ভে থাকাকালীন যা কোনও ভাবে তাঁর শরীরে চলে যায়। আর তার পর, গত ২৬ বছর ধরে গোপনে রয়ে যায় যামিনীর দেহে।
তাঁর কর্মজীবনে প্রায় আট হাজার অস্ত্রোপচার করেছেন শাহিনিয়ান। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার টেরাটোমা-র মুখোমুখি হলেন। এ বারও সফল হয়েছেন তিনি। মাংসপিণ্ডটি বাদ দেওয়া হয়েছে যামিনীর মাথা থেকে। চিকিৎসকদের আশা, এ বার ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবেন মেয়েটি।

প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G