মানুষ পুড়িয়ে মারার দায় স্বীকার করুন  

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫ সময়ঃ ৬:০৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:১১ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক,প্রতিক্ষণ ডট কম

download (3)বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘বিএনপি নেতা খালেদা জিয়াকে আগে মানুষ পুড়িয়ে মারার দায় স্বীকার করতে হবে তারপর সরকার করণীয় নির্ধারণ করবে’।

তিনি খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলেন, ‘সন্ত্রাস করে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, দেশকে পঙ্গু করে কোন আন্দোলন হতে পারে না। এই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস-নাশকতা পরিহার না করলে দেশের মানুষ তাকে ক্ষমা করবে না। সংলাপ করতে হলে, সকল সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ পরিহার করতে হবে’।

বৃহস্পতিবার যশোর ঈদগাহে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রকাশ্য অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাহাবুব উল আলম হানিফ উক্ত কথা বলেন। বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সম্মেলনের প্রকাশ্য অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

এর উদ্বোধন করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী রেজা রাজু।

মাহাবুব উল আলম হানিফ হরতাল-অবরোধের সমালোচনা করে বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলছেন তিনি ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছেন। ভোটের অধিকার তো আছেই।

খালেদা জিয়া দেশবাসীর ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সেই অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন। বারবার বলা সত্বেও বিএনপি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসেনি। আমাদের নেত্রী নিজে খালেদা জিয়ার সাথে টেলিফোনে ৩২ মিনিট কথা বলেছিলেন। কিন্তু, খালেদা জিয়া আমাদের নেত্রীর সাথে অসভ্য ভাষায় কথা বলেছিলেন’।

তিনি খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি ভুল করে নির্বাচনে আসেননি। তার খেসারত আপনাকেই দিতে হবে’।

সুশীল সমাজকে সুযোগসন্ধানী আখ্যায়িত করে হানিফ বলেন, ‘দুই দলের মধ্যে বিরোধ বাধিয়ে তৃতীয় কোন শক্তিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা এবং সেখান থেকে সুবিধা আদায় করা তথাকথিত সুশীলদের কাজ। এটা আওয়ামী লীগ কোনভাবেই মেনে নিবে না। আওয়ামী লীগ কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদকে সমূলে উৎপাটন করবে’।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘দেশের এই পরিস্থিতির জন্য একমাত্র দায়ী খালেদা জিয়া। তিনি টাকা দিয়ে, নির্দেশনা দিয়ে জঙ্গীদের মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন। তারা বাসে পেট্রল বোমা মারছে, সন্ত্রাস করছে, জ্বালাও-পোড়াও চালিয়ে যাচ্ছে। এটা বন্ধ না হলে এই জঙ্গীরা খালেদা জিয়াকেও ছাড়বে না’।

তিনি এই সংকটকে রাজনৈতিক আখ্যায়িত করে বলেন, ‘জঙ্গীদের দমন করতে হলে, সন্ত্রাস দমন করতে হলে, গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন’।

দলের কেন্দ্রীয় কৃষিবিষয়ক সম্পাদক সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ডা. আব্দুর রাজ্জাক এমপি খালেদা জিয়াকে দেশের আপদ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘খালেদা জিয়া গণতন্ত্র ও মানবতায় বিশ্বাস করে না। সে কারণে তিনি জীবন্ত ৭৫ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছেন। তার দেয়া আগুনে শিশুসহ শত শত মানুষ দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এই আপদকে বিদায় করতে না পারলে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না, দেশ উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে না’।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার উন্নয়ন-অগ্রগতির চাকাকে পেছনে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য খালেদা জিয়া গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। কিন্তু দেশের মানুষ সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে ক্ষুধামুক্ত ও ডিজিটাল সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করবেই’।

জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। এরপর সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন দলের যশোর জেলা সাধারণ সম্পাদক শহিন চাকলাদার।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক, শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান সিরাজ, কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, রনজিত কুমার রায় এমপি, আলহাজ আফিল উদ্দিন এমপি, মনিরুল ইসলাম এমপি, সাবেক রাকসু ভিপি একেএম এনামুল হক শামিম। এসময় খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলার দলীয় শীর্ষ নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

সকাল থেকেই জেলার আট উপজেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী বর্ণিল সাজে মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হন।

প্রতিক্ষণ/এডি/রাতুল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G