মায়ের জন্য শ্রদ্ধা
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
বয়স ২ হোক, কিংবা ২০; এমনকি বার্ধ্যক্যের ক্লান্ত সময়টাতেও কোন দুঃখ-দুর্দশায় আক্রান্ত হলে আপনার প্রথমেই যার কথা মনে পড়বে তিনি আপনার মা। যিনি আছেন বলেই আপনি আছেন, যিনি বিশ্বাস করেন বলেই আপনি জীবনযুদ্ধে লড়াই করার শক্তি খুঁজে পান, যার ভালোবাসার মধ্যেই আপনার সকল শান্তি। সেই মানুষটিই হলেন মা।
মায়ের মাহাত্ন্য বর্ণনা করে যুগে যুগে লেখা হয়েছে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা। ধর্ম থেকে শুরু করে সমাজ ও রাষ্ট্র – সকলেই মায়ের অধিকারের ব্যাপারে সর্বদা সচেতন। তারপরও মায়ের প্রশংসা করে শেষ করা যাবে না, জীবনে মায়ের যে কী প্রয়োজন, কী গুরুত্ব তা হাজার হাজার লাইন লিখেও বোঝানো যাবে না।
চিন্তা করুন তো, হঠাৎ কোন একদিন গভীর রাতে আপনি প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হলে কে সারা রাত জেগে থেকে আপনার মাথায় পানি ঢালেন? আপনার মা। যখন আপনার বর্ষামুখর সন্ধ্যায় খুব চা খেতে ইচ্ছে করছে কিন্তু আলসেমি করে বিছানা থেকে উঠতে ইচ্ছে করছে না তখন কে আপনার সামনে চায়ের কাপ নিয়ে হাজির হন? আপনার মা। খুব ছোট্ট কাজ থেকে শুরু করে অনেক বিশাল বিপদ – কোন কিছুই আসলে মাকে ছাড়া সামলানো যায় না। মারা ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক, মারা চিরকালের মমতাময়ী, সর্বংসহা।
তবে মাদের সর্বদা এই মমতাময়ী ও সর্বংসহা রূপে চিত্রিত করার মধ্যেও কিন্তু একটা বিপদ আছে। আমরা সামাজিক মূল্যবোধ থেকে আশাই করে নিই যে, মারা সবসময় পরিবারের সবার জন্য ত্যাগ স্বীকার করবে, নিজের ভালো-মন্দের আগে পরিবারের ভালো-মন্দ বিবেচনা করবে। এর কারণ আমাদের কাছে “মাকে মা মনে হয়, মানুষ মনে হয় না।”
কিন্তু এমনটা কি হওয়া উচিত? আমাদের মারা হয়তো স্বাভাবিক মার্তৃসুলভ মহত্ব থেকে নিজের ভালোর আগে স্বামী-সন্তানের ভালোটাই আগে দেখেন। কিন্তু তাই বলে আমরাও বা কেন মাকে ত্যাগ-তিতিক্ষার পথেই ঠেলে দেব? মায়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে আমরা তো অন্তত চেষ্টা করতে পারি, মায়ের কঠিন কর্মব্যস্ত দিনগুলোকে একটু সহজ করে তুলতে, তাঁর জীবনকে আমাদের সহযোগিতা ও শ্রদ্ধায় আনন্দমুখর করে তুলতে।
আমরা যদি তা করতে পারি তবেই সার্থক হবে আমাদের আজকের মা দিবস পালন। নতুবা তা কেবল ফেসবুক-টুইটারের লোকদেখানো দিবস পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে থাকবে।
বিশ্ব মা দিবসে পৃথিবীর সকল মায়ের প্রতি রইল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া