যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী পদক্ষেপ নিলে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হ্যান সং-রেয়ল বলেন, প্রতি সপ্তাহ, মাস ও বছরের শেষে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাবে উত্তর কোরিয়া।
সাক্ষাৎকারে হ্যান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী কোনো পদক্ষেপ নিলে চারদিকে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে। কৌশলগতভাবে ধৈর্য ধারণের দিন শেষ হয়েছে। বিবিসিকে হ্যান আরো বলেন, ‘যদি তারা আমাদের ওপরে হামলা চালায়, তাহলে আমরা আমাদের নিজস্ব উপায়ে তাদের ওপরে পরমাণু হামলা চালাবো।’ এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘আরো বিদ্বেষপূর্ণ ও আক্রমণাত্মক’ বলে উল্লেখ করেন হ্যান। তিনি বলেন, বারাক ওবামার প্রশাসন অনেক সহনশীল ছিল।সহ্যান জানান, উত্তর কোরিয়া মান ও সংখ্যার দিক দিয়ে পরমাণু বোমাকে উন্নত করবে। ট্রাম্প যুদ্ধ চাইলে উত্তর কোরিয়া প্রস্তুত বলে জানান হ্যান।
বেশ কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। এর জন্য কোরিয়ার একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকেই দায়ী করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এর কয়েক দিন আগে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে গিয়ে ব্যর্থ হয় উত্তর কোরিয়া।
গত ৮ এপ্রিল পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে কোরীয় উপদ্বীপের দিকে পাঠানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসন। উত্তর কোরিয়ায় উসকানিমূলক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জবাব দিতেই ঐ যুদ্ধজাহাজ সেখানে যাচ্ছে বলে জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। একদিন আগেই উত্তর কোরিয়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায়। তবে ঐ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই বিস্ফোরিত হয় বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র।
উত্তর কোরিয়ায় উসকানিমূলক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এই প্রথম নয়। এর আগে জাপান সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের ঠিক আগমুহূর্তে ঐ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এছাড়া গত মাসে জাপান সাগরের দিকে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে তিনটি জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পড়ে।
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে পিয়ঙ্গান প্রদেশে অবস্থিত বাঙ্গিয়ন বিমানঘাঁটি থেকে জাপান সাগরের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেটিই ছিল দেশটির প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন জানিয়েছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে যাচ্ছেন তাঁরা।
গত বছর বেশ কয়েকবার পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায় উত্তর কোরিয়া। দেশটির একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও আক্রমণাত্মক বিবৃতি ঐ অঞ্চলে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি করছে বলে মনে করেন কিছু বিশ্লেষক। পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরে ২০০৬ সাল থেকেই উত্তর কোরিয়ার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ।
প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ