যে গ্রামের সবার একটি কিডনি!
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
প্রাকৃতিকভাবে মানুষের দুটি কিডনি থাকে। তবে আমাদের চারপাশে এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা একটি কিডনি নিয়ে বেঁচে আছেন। এর কারণ সাধারণত হয় কোন অসুখে অঙ্গটি হারিয়ে ফেলা বা কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে কিডনি দান করার কারণে। কিন্তু টাকার জন্য কিডনি বিক্রির বিষয়টা কেমন একবার ভেবে দেখুন তো? তাও আবার যদি পুরো একটি গ্রামের মানুষ টাকার জন্য কিডনি বিক্রি করে দেয়? খুবই ভয়াবহ নয় কি ব্যাপারটা? হ্যা, ঠিক এমনই ভয়াবহ ব্যাপার ঘটে চলেছে নেপালের এক গ্রামে।
গ্রামটির নামই কিডনি গ্রাম। কয়েক দশক ধরেই সেখানে নাকি বেশির ভাগ মানুষ একটা কিডনি নিয়ে দিন যাপন করছেন। নারী-পুরুষ, তরুণ-বৃদ্ধ নির্বিশেষে সকলেরই একই অবস্থা নেপালের প্রত্যন্ত এই গ্রামটিতে।
এই গ্রামের মানুষের মহামারী আকারে কিডনি বিক্রির কারণ হচ্ছে অসীম দারিদ্র্য। মাত্র কয়েকটি পরিবার নিয়ে গড়ে ওঠা এই গ্রামটিতে সবসময়ই অভাব লেগে থাকে। এক গ্রামবাসী জানান, গ্রামের এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে হাজির হয় এক দল অসাধু ব্যবসায়ী। মাদক বা মানুষ পাচারের উদ্দেশ্যে নয়, কিডনির ব্যবসার জন্য! ওই ব্যবসায়ীরা গ্রামবাসীদের মোটা টাকার লোভ দেখিয়ে কিডনি বিক্রিতে উৎসাহ দিতে শুরু করে। সেই ফাঁদে পা দেন গ্রামবাসীরা। শুরু হয় কিডনি বিক্রির হিড়িক।সামান্য একটা কিডনি বিক্রি করে যদি কয়েকবেলার খাবার জোটে তো সমস্যা কোথায়, এমনটাই ভাবনা ছিল ঐ হতদরিদ্র লোকগুলোর।
কিডনি বিক্রি করে কেউ হাতে পেয়েছেন লাখ টাকা, কেউ বা ৮০ হাজার। ওই গ্রামবাসী জানান, টাকার অঙ্কটা লাখ খানেকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আরও এক গ্রামবাসী কেতন তামাঙ্গের কথায়, “ছোট্ট একটা অস্ত্রোপচার। দু’দিন পর ধরাই যাবে না যে শরীরের একটা অংশ বাদ গিয়েছে।” ইন্তু এর বিনিময়ে অভাব ঘোচে কিছুদিনের জন্য হলেও। এই চিন্তা থেকেই গ্রামবাসী কিডনি বিক্রি করে। আর এই কিডনি বিক্রিটা এখন রীতিমতো নিয়মে পরিবর্তিত হয়েছে। যখনই টাকার দরকার হয় বাড়ির কোনও না কোনও সদস্য কিডনি বিক্রি করেন।
চরম দারিদ্রের কারণে নিজেদের শরীর-স্বাস্থ্যের তোয়াক্কা না করে দিনের পর দিন কিডনি বিক্রি করে চলেছেন কিডনি গ্রামের বাসিন্দারা।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া