রহস্যময় ব্রাদার আইল্যান্ড!!
সিফাত তন্ময়
আমেরিকার প্রাণকেন্দ্র নিউইয়র্ক সিটি। আধুনিকতায় ঢাকা এই শহরটিতে রয়েছে এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। সেখানে নেই কোন মানব বসতি। ব্রাদার আইল্যান্ড নামের এই দ্বীপটিকে ঘিরে রয়েছে নানা ধরনের গল্প-কাহিনী। ১৮৮৫ সালের দিকে এই দ্বীপে মানুষের চলাচল ছিল। তখন সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে রোগীকে সরিয়ে আনা হতো এই দ্বীপে। নির্জন এই দ্বীপে গড়ে তোলা হয় একটি হাসপাতাল। টাইফয়েডের চিকিৎসা দেওয়া হতো এখানে। চিকিৎসা চলাকালীন অনেক রোগীই এখানে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে। তাদের মৃত্যুই এই দ্বীপকে অভিশপ্ত করে তুলেছে বলে মানেন অনেকে।
বিশ্বাসীদের দল বলতেন, রাতের আঁধারে মৃতের আত্বারা এখানে জেগে ওঠেন, মানুষের প্রাণ হরণ করে। এই মিথ ছড়িয়ে গেলে মানুষের আনাগোনা কমতে শুরু করে। ১৯৫০ সালের দিকে এই দ্বীপে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র বসানো হয়। তখন মাদকাসক্তে আসক্ত মানুষের চিকিৎসা চলত এখানে। তাদের পাগলামি দেখে অনেক চিকিৎসকই পালিয়ে বেঁচেছেন এই দ্বীপ থেকে। এরপর থেকেই এই দ্বীপকে নিয়ে মুখরোচক একেক গল্প বেরিয়ে আসতে থাকে। দ্বীপটিকে দূর থেকে দেখলে মনে হতো স্বপ্নপুরী কিন্তু এর ভেতরে ঢুকলে সবুজ গাছের নিচে অন্ধকারে ডুবে যেতে হতো। এই অন্ধকার পেরিয়ে দ্বীপে চলাচলের রাস্তা খুঁজে পাওয়া ছিল কঠিন। অনেকেই ভুল রাস্তায় হেঁটে ক্লান্ত হয়ে ঢুকে পড়তেন পাথুরে গুহায়। কথিত আছে এ দ্বীপের পাথুরে গুহাগুলো কেবল অন্ধকারেই মুখ খুলে বসে থাকত।
যখন কেউ এ গুহায় ঢুকত অমনি বন্ধ হয়ে যেত গুহার মুখ। এমন অনেক মানুষ হারিয়ে গেছে এই দ্বীপে। এ দ্বীপটি মানুষ ফেলে চলে যায় ১৯৬৩ সালের দিকে। কিন্তু হাসপাতালটি সেখানে সে অবস্থাতেই ছিল। মাদকাসক্তদের বসতবাড়ির ও আসবাবপত্র এখনো আগের মতোই রয়েছে। ১৯৭০ সালের দিকে দ্বীপটি বিক্রি করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু এই দ্বীপটি কিনতে কেউই আগ্রহী হয়নি। তাই কয়েক দশক ধরে দ্বীপটি পরিত্যক্ত অবস্থাতেই ছিল। ব্রাদার আইল্যান্ড হঠাৎ করেই আলোচনায় আনেন এক শখের পর্যটক। তিনি পথ ভুলে পৌঁছে যান এই দ্বীপের কাছে। তারপর তুলে আনেন একের পর এক ছবি। কৌতূহলী মানুষজন খোঁজ নিয়ে জানে এটা সেই অভিশপ্ত ভুতুড়ে দ্বীপ ব্রাদার আইল্যান্ড।যারা প্রেত ও আত্নারা নিয়ে গবেষণা করেন তারা কিন্তু খুব সুবিধার চোখে দেখছেন না বিষয়টিকে। তাদের মতে, মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার জন্য অভিশপ্ত আত্নারা জেগে উঠেছে। পর্যটকের ক্যামেরায় তোলা ছবিতে দেখা গেছে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের কয়েকটি দেয়ালে গুলির দাগ রয়েছে। কীভাবে এগুলোর চিহ্ন এলো তা এক রহস্য তৈরি করেছে।
ছবি :সংগৃহীত
প্রতিক্ষণ/এডি/ এস. টি.