রিজার্ভ চুরির ঘটনায় চীনে গ্রেফতার ২

প্রকাশঃ আগস্ট ৫, ২০১৭ সময়ঃ ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:১২ অপরাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরির ঘটনায় এবার দুই চীনা নাগরিকের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এরইমধ্যে ওই দুই চীনা নাগরিককে গ্রেফতার ও তাদের ক্যাসিনোর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।

গত ৩ আগস্ট ব্লুমবার্গ.কমে প্রকাশিত এক দীর্ঘ প্রতিবেদনে ডিং (৪৫) ও গাও শুহুয়া (৫৩) ওই দুই চীনা নাগরিক সম্পর্কে বলা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাসিনো ব্যবসায়ী ডিং ২০১৬ সালের মার্চে ও শুহুয়া আগস্টে চীনে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জুয়াকেন্দ্র ম্যাকাওতে ডিং ২০০৭ সালে একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান চালু করেন। তিনি জুয়ারিদের এনে এখানকার ক্যাসিনোতে জুয়ার আসর বসাতেন। অন্যদিকে, শুহুয়া পেইচিংয়ে একটি ক্যাসিনো চালান। ফিলিপাইনে অন্তত ২৯টি জায়গায় তার ক্যাসিনো নেটওয়ার্ক রয়েছে।

তারা দুজন বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা সরিয়ে নিতে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের সহায়তা নিতে পারেন বলে হংকং পুলিশের ধারণা। ওই অর্থ তারা উত্তর কোরিয়াতেও পাঠিয়ে দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় এরআগে চলতি বছরের এপ্রিলে এক প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়ার জড়িত থাকার অভিযোগের স্বপক্ষে আরও প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করে বহুজাতিক সাইবার নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিবিষয়ক অ্যান্টিভাইরাস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি। উত্তর কোরিয়ার প্রসিদ্ধ হ্যাকার গ্রুপ ল্যাজারস এতে জড়িত বলে দাবি করা হয়।

তবে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় পিয়ংইয়ং জড়িত বলে অনেক আগে থেকেই বলে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)। সংস্থাটির দাবি, চীনের মধ্যস্বত্বভোগীদের সহায়তায় উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা ওই বিপুল অংকের অর্থ লোপাট করে বলে তদন্তে জেনেছেন এফবিআই কর্মকর্তারা।

ব্লুমবার্গের ৩ আগস্টের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে ডিং ও শুহুয়ার যোগসাজশে পাতানো জুয়ার মাধ্যমে রিজার্ভের চুরির অর্থ ভাগাভাগির বিষয়টিও। বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার ক্যাসিনো সোলারির একটি ভিআইপি কক্ষে জুয়ার আসর বসান চীনা জুয়ারি ডিং, শুহুয়া ও কয়েক সঙ্গী। খেলার সময় তারা যে ছোট পাতলা চিপ দিয়ে বাজি ধরেন, তার প্রতিটির দর ২০ হাজার মার্কিন ডলার। মূলত ওই খেলা ছিল পাতানো এবং জুয়ারীরাদের উদ্দেশ্য ছিল হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আনা রিজার্ভের টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়া।

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ চুরিতে সম্পৃক্ততা ডিং ও শুহুয়ার জন্য প্রথম নয়। ক্যাসিনো পরিচালনা ও জুয়ার আসরের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরেই তারা এর সঙ্গে জড়িত।

২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে সংরক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়ে যায়। চুরি যাওয়া অর্থের কিছু পরিমাণ ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের কয়েকটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে হ্যাকাররা। চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে ২ কোটি ডলার শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুরুতেই আটকে দেয় এবং পরে তা ফিরিয়ে দেয়। বাকি অর্থ এখনও ফেরত পায়নি বাংলাদেশ। পর ধারাবাহিক তদন্তে আসতে থাকে উত্তর কোরিয়া ও চীনা হ্যাকারদের নাম।

প্রতিক্ষণ/এডি/রন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G