“শিংওয়ালা মানুষ”
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
মাথায় মাথায় ঢুঁ লাগলে শিং গজায়। শিং যাতে না গজায় সে কারণে আবার দ্বিতীয়বারও ঢুঁ মেরে নিতে হয়। ছোট বেলাতে এমনটাই ভাবতাম আমরা সবাই। শিশু-কিশোর, কখনও কখনও বড়রাও এমনটাই মনে করতেন। এখন আমরা জানি এ সব কিছুই কুসংস্কার। আজ পর্যন্ত এমন কোনো ঘটনা শোনা বা দেখা কোনটাই যায়নি।
তবে চীনের এক নারীর মাথার শিং ভাবিয়ে তুলেছে সবাইকে। তবে কি তিনি কারোর মাথায় ঢুঁ মেরে বসেছিলেন? চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশের বাসিন্দা ৮৭ বছর বয়সী লিয়াং শিউঝেনের মাথায় গজিয়েছে পাঁচ ইঞ্চি লম্বা এক শিং। এর কোনো ব্যাখ্যাই খুঁজে পাচ্ছেন না চিকিৎসকরাসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
লিয়াং জানিয়েছেন, ঘটনার শুরু হয় আট বছর আগে। হঠাৎ তার মাথায় এখন যেখানে শিং দেখা যাচ্ছে, ঠিক সেখানেই একটি কালো আঁচিলের জন্ম হয়। এই আঁচিল সারাতে তিনি তখন ভেষজ চিকিৎসার আশ্রয় নেন। কিন্তু কোনো লাভ হয় না। খুব ধীরে বড় হতে থাকে এটি। দু’বছর আগে হঠাৎ করে আঁচিলটি ফেটে যায়। এর ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে ছোট আঙ্গুল সদৃশ একটা শিং। এর পর থেকে এর বৃদ্ধি আগের চেয়ে বেড়ে যায়।
লিয়াংয়ের ছেলে ওয়াং ঝাওজুন জানান, আমরা হাসপাতালে গিয়েছিলাম, কিন্তু চিকিৎসক কোনো ব্যবস্থাই দিতে পারেননি। আমার মা হাসপাতালে যাওয়া পছন্দ করেন না, কারণ তার ধারণা, তিনি একবার সেখানে গেলে আর ফিরে আসতে পারবেন না। মায়ের এই ভয়ের কারণেই ওয়াং চিকিৎসকের কাছে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
ওয়াং ঝাওজুন আরও বলেন, প্রথমদিকে শিংটার বৃদ্ধি ততোটা ব্যাপক হারে ছিল না। ছয় মাস আগে একদিন মায়ের চুল ধুয়ে দিচ্ছিলাম। হঠাৎ শিংটায় জোরে একটা খোঁচা লাগে। এরপরই এর বৃদ্ধি আগের চেয়ে দ্রুত হয়ে গেল। এখন এর দৈর্ঘ্য পাঁচ ইঞ্চি আর প্রস্থ দুই ইঞ্চি। সেই সঙ্গে এর থেকে রক্তক্ষরণও হয় আজকাল।
শিংয়ের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে লিয়াং বলেন, এটা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। মাঝে মাঝে এতো ব্যথা করে যে, ঘুমাতে পারি না। তবে সুখের বিষয় হলো, চিকিৎসকরা দুই বছরের চেষ্টায় অবশেষে শিংয়ের রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন। হয়তো খুব শিগগিরই তারা লিয়াংয়ের চিকিৎসারও কোনো উপায় বের করে ফেলতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, চুল ও নখে থাকা কেরাটিন প্রোটিনই এই শিং সৃষ্টির জন্য দায়ী।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ