শীতল পাটি বুনে জীবিকা

প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৫ সময়ঃ ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

গোলাম রাসেল

satil pati

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারি ইউনিয়নের ছায়া সুনিবিড় গ্রাম কুরচাই ও চাকুয়া। কালী বানার নদীতীরের এই দুই গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবার শীতল পাটি বুনে জীবিকা নির্বাহ করছে। অভাবের সংসারে আনছে সচ্ছলতা।

শীতল পাটিকে কেন্দ্র করে কুরচাই ও চাকুয়া গ্রামে গড়ে উঠেছে ভিন্নধর্মী হাট। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা এখান থেকে শীতল পাটি কিনে নিয়ে যায়। কাক ডাকা ভোর থেকেই এ দুই গ্রামের সংখ্যালুঘু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ শীতল পাটি বুননের কাজ শুরু করেন। প্রযুক্তির দাপট সত্ত্বেও এ আদি শিল্পকে দুই গ্রামের মানুষ আঁকড়ে ধরে আছেন।

গত সপ্তাহে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এ দুই গ্রামের শীতল পাটি শিল্পীরা কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের কেউ শীতল পাটি বুননের মূল উপাদান পাইত্রা গাছের বেত ছাড়াচ্ছেন, কেউবা বেত কাটছেন। আর কেউবা উঠানে বসে শীতল পাটি বুনন করছেন। যেন এক মহাকর্মযজ্ঞে মেতেছেন তারা। দুই গ্রামের প্রতিটি সংখ্যালুঘু সম্প্রদায়ের বাড়ির আঙিনা ও ঘরে পাটি বুননের কাজ চলে দিন-রাত।

চাকুয়া গ্রামের রেখা রানী দে শীতল পাটি বুনন ও বিক্রি করে সংসার চালান। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দেশজুড়েই শীতল পাটির কদর রয়েছে। দিন দিন এর চাহিদাও বাড়ছে । তাই বেশি করে পাটি তৈরি করছি। শীতল পাটি বুনন ও বিক্রি করে যে আয় তা দিয়ে সংসারে সহযোগিতা করছি।’

এই গ্রামের হারাধন চন্দ্র দের স্ত্রী সুরবালা দে কুড়েঘরের উঠানে বসে শীতল পাটি বুননে ব্যস্ত। তিনি বলেন, ‘আমাদের এ শিল্পের মূলধনের অভাব রয়েছে। সহযোগিতা পেলে আমরা এ শিল্পকে দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও পরিচিত করতে পারতাম।’

কুরচাই গ্রামের পাটি শিল্পী সুরেন্দ্র চন্দ্র দে, অমূল্য চন্দ্র দে, সুনীল চন্দ্র দে ও বাবুল চন্দ্র দে সহ বেশ কয়েকজন পাটি শিল্পী বলেন, দেশের দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এ দুই গ্রামে এসে শীতল পাটি ক্রয় করে নিয়ে যায়। বর্তমানে তাদের তৈরি শীতল পাটি ২ হাজার থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

নিগুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন খান জানান, কুরচাই ও চাকুয়া গ্রামের ১৫০ পরিবারের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ শীতল পাটি বুনন করে তাদের সংসার চালান। তবে এসব পাটিশিল্পীরা সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা পেলে এ শিল্পকে আরও জনপ্রিয় ও গৌরবময় করে তুলতে পারতেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলও শীতল পাটির শিল্পীদের সহায়তার আশ্বাস দেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/ডিএইচ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G