সন্তানের মৃত্যু সংবাদে হাউমাউ করে কাঁদছেন খালেদা

প্রকাশঃ জানুয়ারি ২৪, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৫৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৪৬ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

khaleda kannaশনিবার দুপুরে গুলশানে নিজের কার্যালয়ে বসে সংবাদপত্র পড়ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এর কিছুক্ষণ আগেই অবরোধের মধ্যে ৩৬ ঘণ্টার হরতালের ঘোষণা আসে বিএনপি জোটের পক্ষ থেকে।

এই সময়ই আকস্মিক আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে দুই ভাইয়ের স্ত্রী নাসরিম সাঈদ ও কানিজ ফাতেমা ওই কার্যালয়ের দোতলায় ওঠেন।

দোতলায় নিজের চেম্বারে গত ৩ জানুয়ারি থেকে রয়েছেন বিএনপি চেয়াপারসন। বেলা আড়াইটার দিকে সরাসরি সেখানে উঠে যান প্রয়াত শহীদ এস্কান্দার ও শামীম এস্কান্দারের স্ত্রী।

বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, দুই ভাইয়ের বউয়ের কাছ থেকে ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে প্রথমে এক রকম নির্বাক হয়ে পড়েন খালেদা। এরপরই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন মমতাময়ী মা। কান্নায় কোনো কথা বলতে পারছিলেননা তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেশিরভাগ সময় স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত কার্যালয়টিতে যেন নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কারো মুখে কোনো কথা নেই। পুরো ভবন জুড়ে পিনপতন নিরবতা বিরাজ করছে।

চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার  জানান, দীর্ঘদিন দেশান্তরে থাকা প্রিয় ছেলের মৃত‌্যুর সংবাদ শোনার পর একজন কোমলময়ী মা হিসেবে মানসিকভাবে ভেঙে পড়াটা খুবই স্বাভাবিক। ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শোনার সঙ্গে সঙ্গে স্তব্ধ হয়ে যান তিনি।

চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং এর আরেক কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, বেগম জিয়া ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর  কান্নায় ভেঙে পড়েন।

জিয়াউর রহমান ও খালদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো শনিবার দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।

স্ত্রী সৈয়দ শামিলা রহমান সিঁথি, দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে নিয়ে কুয়ালালামপুরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন কোকো।

জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হয়ে এক বছর কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন আরাফাত।

সেখান থেকে তিনি মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। অন্যদিকে মুদ্রা পাচার মামলায় বাংলাদেশের আদালতে ২০১১ সালে তার ৬ বছর কারাদণ্ড হয়; তবে বিএনপির দাবি, এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

২০১৩ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়ে খালেদা জিয়া ব্যাংককে যাত্রাবিরতি দিয়ে ছোট ছেলেকে দেখতে গিয়েছিলেন। সেটাই ছিল মায়ের সঙ্গে তার শেষ সাক্ষাৎ।

এদিকে আরাফাতের দাফনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বিকালে সাংবাদিকদের জানান বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান।

সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আশরাফউদ্দিন নিজান জানান, আরাফাতের মরদেহ মালইয়া ইউনির্ভাসিটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

রোববার জোহরের নামাজের পর কুয়ালালামপুরে নাগারা মসজিদে জানাজা হবে বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার জানিয়েছেন।

আরাফাতের মৃত্যুর সংবাদের পর গুলশানে খালেদার কার্যালয়ে ছুটে যান নিকটাত্মীয়রা। আরাফাতের শাশুড়িসহ তাদের পরিবারের সদস্যরাও যান সেখানে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম যান দলীয় চেয়ারপারসনকে সান্ত্বনা জানাতে।

বিএনপি নেতা গিয়াস কাদের চৌধুরী, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাৎ কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ ও তার স্ত্রী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সদরুল আমিন, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস যান সেখানে।

প্রতিক্ষণ/এডি/জাহানারা

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G