সমলিঙ্গে বিবাহ কিন্তু ‘সমকামী’ নন!

প্রকাশঃ অক্টোবর ২৯, ২০১৬ সময়ঃ ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

8980991_origএকবিংশ শতকের আধুনিকতাকে ভর করে আজ সবকিছুই আমাদের মুঠোবন্দি। মহাকাশ থেকে গহীন সমুদ্র, ছোট্ট একটা মাউস ক্লিকেই কত অনায়াস যাতায়াত। তবু সবকিছুর পরেও একটা ‘কিন্তু’ থেকে যায়। যে নারীর শরীর থেকে জন্ম এই সভ্যতার, সেই নারীকে কী আজও তাঁর যথাযোগ্য সম্মান দিতে পেরেছে তথাকথিত ‘আধুনিক’ সমাজ? প্রাচীনকাল থেকে আজকের একবিংশ শতক, নারী স্বাধীনতায় আক্ষরিকভাবে ঠিক কতটা এগিয়েছি আমরা?

এ বার সেই পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধেই সদর্প ঘোষণা। শহুরে নারীর পথে বিপ্লব নয়, ঝড় তোলা নয় কাগজে-কলমে, এ একেবারে বাস্তবিক প্রয়োগ। আর সেই প্রয়োগে তাদের হাতের অস্ত্র সমলিঙ্গে বিবাহ! নাহ! তারা কেউই ‘সমকামী’ নন। তবুও…।

তান506163665জানিয়ার প্রত্যন্ত এলাকা ন্যামোঙ্গো। সেখানকার একটি ছোট্ট উপজাতি সম্প্রদায় কুরয়া।

পুরুষতন্ত্রের স্টিরিওটাইপ ধারণাকে অবলীলায় বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছেন স্মার্ট ফোন, ওয়েব দুনিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ার থেকে কয়েকশো যোজন দূরে থাকা এই মানুষগুলো। কিন্তু কী ভাবে? দেখুন…

কুরয়া উপজাতিতেও জমির অধিকার পুরুষানুক্রমে ভোগ করার রীতি প্রচলিত আছে। তবে যদি কোনও মহিলার স্বামী মারা যান এবং তার কোনও পুত্র সন্তান না থাকে তাহলে সেই জমির অধিকার পাবেন ওই মহিলা।

কিন্তু এই রীতিতেও পুরুষ আধিপত্যই বেশি। অগ্রাধিকারও পুরুষেরই। তাই এই নিয়ম মনঃপূত নয় কুরয়া উপজাতির মহিলাদের।

সেই জন্যই ‘ন্যুম্বা নথুবু’ নামে একটি রীতির প্রচলন শুরু করেছেন এখানকার মহিলারা। যার অর্থ ‘ওম্যান ম্যারিং ওম্যান’। জমির অধিdscn0694কার নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতেই এমন নিয়ম চালু করেছেন কুরয়া’র মহিলা ব্রিগেড।

তবে নিজেদের মধ্যে বিয়ের এই রেওয়াজ কিন্তু প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে এমন নয়। বরং মাত্র শ-খানেক বছর আগে থেকে এই ‘আন্দোলন’এর শুরু। কুরয়া উপজাতির মেয়েরা নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যে পথ নিয়েছেন, তা আধুনিক বা অত্যাধুনিক নারীবাদীদেরও চমকে দেয়।

বিধবা মtan-1হিলাদের কাছ থেকে যাতে কোনওভাবেই জমি হাতছাড়া না হয়, তাই নিজেদের মধ্যেই বিয়ে করে নিতেন তারা।

তবে এই বিয়ের প্রধান কারণই ছিল নিজের অধিকার রক্ষা।এই বিয়ের সঙ্গে সমকামীতার কোনও সম্পর্ক নেই।

৪৯ বছরের মুগসি ম্যানিঙ্গো এবং বছর ২৭-এর জুমা। ২০১৫-র জুন মাসে বিয়ে করেছেন তারা। মুগসির স্বামী মারা গিয়েছেন।

অন্যদিকে প্রথম বিয়ের একটি পুত্রসন্তান নিয়ে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিলেন জুমা। আরও দুটি ছেলে হয় তার। কিন্তু এরপরেই স্বামী ছেড়ে চলে যায় জুমাকে।

এখন মুগসির স্বামীর ভিটেতে একসঙ্গে থাকেন দু’জন।

তিন ছেলে যাতে কোনও ভাবেই তাদের জমি কেড়ে নিতে না পারে তাই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা।মুগসি আর জুমার মতে, এইভাবেই ভাল আছেন তারা। এখন তাদের সংসার, জমি, সিদ্ধান্তের উপর শুধু তাদের অধিকার।

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/তাজিন

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G