হরেক ফ্যাশনের চুড়ি
ফারজানা ওয়াহিদ
নারীর সাজের প্রধান প্রধান অলংকারের মধ্যে চুড়ি অন্যতম। প্রাচীনকাল থেকেই চুড়ি নারীদের কাছে বেশ প্রিয়। একসময় নারীরা শুধু শাড়ির সাথেই চুড়ি ব্যবহার করত। তখন তারা পছন্দ করতেন সোনা অথবা কাঁচের চুড়ি। এখন যুগ পাল্টেছে আর সেই সাথে পাল্টেছে চুড়ির ধরনও। বর্তমানে সোনা আর কাঁচের চুড়ির পাশাপাশি সমান ভাবে জায়গা করে নিয়েছে কাঠ, মেটাল, প্লাস্টিক আর মাটির চুড়িও। কারণ এগুলো প্রচলিত ধারার বাইরে এসে চুড়ির বৈচিত্র্যতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
বর্তমানে চুড়ির ধরনই শুধু পাল্টায়নি, পাল্টেছে চুড়ির ব্যবহারও। এখন কেউ আর চুড়ি পড়ার জন্য শাড়ি পড়ার অপেক্ষা করেন না। পোশাকটি ফতুয়া, লংস্কার্ট বা সালোয়ার কামিজ যাই হোক না কেন, সব পোশাকের সাথেই তরুণীদের মাঝে চুড়ি পরার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তবে অবশ্যই সেক্ষেত্রে পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে হবে।
শামুকের খোল, তামা, ব্রোঞ্জ, সোনা ও হাতির দাঁতের চুড়িও একসময় বেশ প্রচলিত ছিল। আর এখন আধুনিকতার কল্যাণে, মেটাল, সুতা, চামড়া, ব্যাকেলাইট, রবার, কাঠ, মাটি, বিডস, পুঁতি, সিটি গোল্ডসহ নানান ধরনের চুড়ি দেখা যায়। আর ফ্যাশনের সাথে তাল মিলিয়ে, কাঁচের চুড়িতে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে শিল্পের বাহারি ডিজাইনের ব্যবহার। কাঁচের চুড়ির ওপর নানা রঙের পাথর, চুমকি, জরিসহ বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করে আনা হচ্ছে নতুনত্ব। আর তাই তো শুধু শাড়ি আর সালোয়ার কামিজের মাঝেই সীমাবদ্ধ নেই চুড়ি। সকল প্রকার পোশাকের সাথেই এখন চুড়ি মানানসই।
আজকাল কপার, তামা, দস্তাসহ বিভিন্ন ধাতু দিয়ে তৈরি হচ্ছে বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের চুড়ি আর বালা। আবার মাটির সিরামিকের মধ্যে রঙ ও নকশা করেও তৈরি করা হচ্ছে চুড়ি। এসকল চুড়ি দেশীয় সুতির কাপড় বা তাঁতের কাপড়ের সাথে বেশ মানানসই। প্লাস্টিকের বালার উপর সুতা প্যাচিয়ে তৈরি করা হচ্ছে চমৎকার সব সুতা চুড়ি। শুধু সুতাই নয়, কাটান কাপড় ব্যবহার করে, লেস বানিয়ে তৈরি করা হচ্ছে রঙ বেরঙের চুড়ি।
হরেক ফ্যাশনের এইসকল চুড়ি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সামনে থেকে টিএসসি মোড়, কলা ভবন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ছবিরহাট, দোয়েল চত্বরে পাওয়া যায়। এছাড়াও ইডেন কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সামনে, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চকেও পাওয়া যায় রেশমী চুড়িসহ হরেক রকম চুড়ি। বসুন্ধরা সিটি থেকে শুরু করে শহরের প্রায় সবগুলো মার্কেট ও শপিংমলেও পাওয়া যাচ্ছে বাহারী ডিজাইনের বাহারি চুড়ি। সারা বছরই চুড়ি বিক্রি হয়। ডজনপ্রতি চুড়ি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, রেশমি চুড়ি ২৫ টাকা দামে বিক্রি করা হয়। তাছাড়াও বিভিন্ন দোকানে ডজনপ্রতি ২৫ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা দামের চুড়িও পাওয়া যায়।
প্রতিক্ষন/এডমি/এফজে