হাজিদের মৃত্যু ‘নিশ্চিত নিয়তি’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
হাজিদের মৃত্যুকে তাদের ‘নিশ্চিত নিয়তি’ বলেছেন সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ বিন-আবদুল্লাহ আল শেখ।মিনায় হাজিদের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
মিনায় পদদলিত হয়ে ৭৬৯ হাজির মৃত্যুর জন্য বিভিন্ন মহল থেকে সৌদি আরবের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করা হচ্ছে। আর হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকা দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফকে গ্রান্ড মুফতি বললেন, হাজিদের মৃত্যু ‘আল্লাহর ইচ্ছায়’ হয়েছে। গ্রান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ বিন-আবদুল্লাহ আল শেখ বলেন, এদের ভাগ্য এবং নিয়তিতে যা লেখা ছিল, তা অবশ্যম্ভাবী। তিনি আরো বলেছেন, এ জন্য সৌদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দোষী হতে পারেন না।
বিবিসির এক খবরে শনিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, হজ পালনরত অবস্থায় মিনায় শয়তানের উদ্দেশে (প্রতীকী) পাথর ছোড়ার সময় হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৬৯ জনে। আর আহতের সংখ্যা আট শতাধিক। অপ্রত্যাশিত এই মৃত্যু ও আহতের ঘটনায় সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষ একেক সময় একেক ধরনের কথা বলছে। সবশেষ গ্রান্ড মুফতি বললেন, হাজিদের মৃত্যু ছিল তাদের নিয়তি।
এদিকে হজে এই দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছে মুসলিম বিশ্ব। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জাতিসংঘে বক্তব্য দেওয়ার সময় হাজিদের মৃত্যুর বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তোলেন। এ ছাড়া দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি শুক্রবার বলেন, এই মৃত্যুর দায় সৌদি আরবকেই নিতে হবে।
এদিকে ব্রিটেনে একটি হজ ট্যুর প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা মোহাম্মদ জাফারি এত হাজির মৃত্যুকে সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি ‘আল্লাহর ইচ্ছা’ বলায় তিনি এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই বিপর্যয় আল্লাহর ইচ্ছা নয়, এটি বরং সৌদি আরবের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার জন্যই ঘটেছে।
মোহাম্মদ জাফারি বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী সৌদি কর্তৃপক্ষ তাদের গুরুত্বপূর্ণ অতিথিদের জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার পরই ভিড়ের চাপে এই ঘটনা ঘটেছে।
তবে রাজকীয় অতিথিদের গাড়ি বহরের জন্য রাস্তা বন্ধ রাখার কারণেই সেদিন ভিড়ের মধ্যে বিশৃঙ্খলা এবং পদদলনের ঘটনা ঘটে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তাকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। লন্ডনে সৌদি রাষ্ট্রদূত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নওয়াফ আল সউদ এক বিবৃতিতে এরকম গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল মানসুর আল-তুর্কি এর আগে সুনির্দিষ্টভাবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ সৌদি আরবের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা কখনোই ওই এলাকায় গাড়ি নিয়ে যান না। ইরানের টেলিভিশন চ্যানেল ‘প্রেস টিভি’ এবং লেবাননের ‘আদিয়ার’ টিভি এই গুজব ছড়াচ্ছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়।
এদিকে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান ইতিমধ্যে এই ঘটনার দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া হজ ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে