হাতির মল দিয়ে কফি !
প্রতিক্ষণ ডেস্ক :
কফি, নাম শুনলেই জিবে কেমন একটা স্বাদ জাগে। আর নিয়মিত যাদের কফি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের বেলায়তো কোনো কথাই নেই । বিশেষ মুহুর্ত আর আড্ডায় কফির যেন জুঁড়ি নেই।
এমনই কফি ভক্তদের হয়তো শিরোনাম পড়ে কফি খাওয়ার শখ মিটে গেছে। অবশ্য এমনটা হবারই কথা। কারণ এমন আকর্ষণীয় পানীয়তে হাতির মল মিশলে যেকোনো মানুষেরই ঘেন্না লাগবে। যদি জানার চেষ্টা করেন কিভাবে বিশ্বের সবচেয়ে সুস্বাদু এবং দামি কফি তৈরিতে হাতিকে ব্যবহার করা হয়, তাহলে হয়তো পরবর্তী সময়ে ভালো লাগতেও পারে।
আমরা যে কফি খাই তার মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে দামি কফিটির নাম ব্ল্যাক আইভরি কফি। আর এ কফি উৎপাদন করা হয় থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে কানাডার ব্লাক আইভরি কোম্পানীতে । কানাডার উদ্যোক্তা ব্লেক ডিনকিনের বিচিত্র পদ্ধতিতে কফি উৎপাদনের জন্য সকলের কাছেই বেশ সমাদৃত তার কোম্পানি। এবার জানাবো কিভাবে তৈরী হয় এই বিশেষ কফি।
থাইল্যোন্ডের উত্তরাঞ্চলের উৎপাদিত আরাবিকা কফির স্বাদ যেকোন এলাকার চেয়ে ভিন্ন। এই আরাবিকা কফির বীজ খুব যত্ন সহকারে সংগ্রহ করে ডিনকিনের কোম্পানির শ্রমিকরা। এরপর সেই বীজগুলোকে সঠিক প্রক্রিয়ায় ধোঁয়ার পর হাতিকে খেতে দেয়া হয়। এই কফি বীজগুলো হাতির পাকস্থলীর এনজাইমের সংস্পর্শে আসে এবং একারণে বীজটির প্রোটিন অংশ বিভক্ত হয়ে যায়। কারণ এই প্রোটিনই কফিকে তেতো করে। কফিতে যত কম প্রোটিন থাকবে ততই তেতো স্বাদ কম থাকবে। হাতির পাকস্থলীতে কফি বীজ প্রায় ১৫ থেকে ৭০ ঘণ্টা পর্যন্ত হজম হতে থাকে। একটা পর্যায়ে যখন হাতি নির্দিষ্ট স্থানে মলত্যাগ করে, তখন শ্রমিকরা সেই মল থেকে অত্যধিক যত্নের সঙ্গে কফির বীজগুলো সংগ্রহ করে। বীজ সংগ্রহ হয়ে যাবার পর কারখানার নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে তৈরি হয় পৃথিবীর সবচেয়ে দামি এবং সুস্বাদু ব্ল্যাক আইভরি কফি।
ব্ল্যাক আইভরি কফির দাম শুনলে হয়তো আপনার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরতে পারে। মাত্র এক কিলোগ্রাম কফির দাম প্রায় ১২০০ মার্কিন ডলার। ৩৩ কিলোগ্রাম কফি চেরি থেকে মাত্র এক কিলোগ্রাম কফি তৈরি করা হয়। যেখানে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এই পরিমান কফি চেরি দিয়ে অন্তত ৩০ কিলোগ্রাম কফি উৎপাদন করা হতো। পৃথিবীর হাতে গোনা কয়েকটি নামী দামি রেস্টুরেন্টে কমপক্ষে ৫০ মার্কিন ডলার খরচ করে মাত্র এক কাপ কফি পাওয়া যায়।
প্রতিক্ষণ/এডি/নুর/বাদল