হৃৎযন্ত্র ব্যাগে নিয়ে ৫৫৫ দিন

প্রকাশঃ জুন ১৪, ২০১৬ সময়ঃ ২:৪৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ২:৪৪ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

default-1465400929-stan-larkin-lived-without-a-heart-for-a-year-and-just-received-a-transplant

পিঠে একটা ছোট্ট ব্যাকপ্যাক। দেখে যে কারোরই মনে হবে কলেজ ছাত্র। খেলা, আড্ডা যাই হোক এই ব্যাগ কাঁধেই থাকে। কারণ তার জীবনীশক্তিই আসে এই ব্যাগ থেকে! ফসলি জমিতে কীটনাশক ছেঁটানোর যন্ত্রের মতো ব্যাগ থেকে বেরিয়ে গেছে একটা পাইপ। আর সেটাই তাকে প্রায় দেড় বছর ধরে বেঁচে থাকার শক্তি জুগিয়েছে।

২৪ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ এই যুবকের নাম লারকিন। আমেরিকার মিশিগানের ইপসিলায়েন্ত শহরে থাকেন। তার কাঁধে ঝোলানো এই যন্ত্রের পোশাকি নাম ফ্রিডম ড্রাইভার মেশিন। আসলে এটা হল একটা নকল হৃৎযন্ত্র। হৃৎযন্ত্রে সমস্যার জন্য সেটি প্রতিস্থাপনের দরকার হয়েছিল লারকিনের। কিন্তু সময় মতো প্রতিস্থাপনযোগ্য অন্য একটি হৃৎযন্ত্র পাওয়াটা আমেরিকার মতো দেশেও বেশ মুশকিলের বিষয়। কিছু পদ্ধতি রয়েছে। যাতে সময় লাগতে পারে বছর খানেকেরও বেশি।

ততদিন সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করার উপায় বাতলে দিয়েছিলেন ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান ফ্রাঙ্কেল কার্ডিওভাসক্যুলার সেন্টারের চিকিৎসকেরা। তারাই লারকিনের শরীরের সঙ্গে ফ্রিডম ড্রাইভার যন্ত্রটি লাগিয়ে দেন। কাঁধে করে এত দিন সেটাই সঙ্গে নিয়ে ঘুরতেন লারকিন। এক-দু’মাস নয়। টানা ৫৫৫ দিন, অর্থাৎ এক বছরেরও বেশি সময় নিজের হৃৎপিণ্ড ছাড়াই বেঁচে ছিলেন লারকিন।

35123C0000000578-3632229-image-a-16_1465426465252

সম্প্রতি হৃৎযন্ত্র প্রতিস্থাপন হয়েছে তার। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার সফল। আর কয়েক দিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরতে পারবেন লারকিন।

সমস্যার শুরু বছর আট-নয় আগে। বাস্কেট বল খেলতে খেলতেই হঠাৎ একদিন অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন লারকিন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার জানান, একটি বিরল বংশগত রোগ রয়েছে তার। নাম ফ্যামিলিয়াল কার্ডিওমায়োপ্যাথি। এই রোগে ধীরে ধীরে হৃৎযন্ত্রটি বিকল হয়ে যায়। তখন এটি প্রতিস্থাপন ছাড়া অন্য কোনো রাস্তাই থাকে না। বছর কয়েকের মাথায় একই অসুখ দেখা যায় লারকিনের ভাই ডমিনিকের শরীরেও। ছ’মাস হাসপাতালে থাকার পরে সফল প্রতিস্থাপন করা হয় তারও। কিন্তু লারকিনের শরীরের চাহিদা মতো হৃৎযন্ত্র পেতে সময় লাগছিল বেশ খানিকটা। তাই চিকিৎসকেরা তার শরীরের সঙ্গে নকল হৃৎযন্ত্র লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন।

লারকিনের মা ভনসাইল ম্যাকক্রেয়ি বলেছেন, ‘প্রথমে ভাবতাম, এই নলগুলোর যত্ন নেব কী করে। সব সময় সংক্রমণের একটা ভয় থাকত। খুব সাবধানে ওটা ব্যবহার করতে হতো। কিন্তু এত দিন ধরে এ সব করে করে অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল।’

দীর্ঘদিনের সঙ্গী ব্যাগটা বেশ যত্নেই রাখবেন নিশ্চয়ই লারকিন। সূত্র : সিএনএন

https://www.youtube.com/watch?v=b743glD3IAw

প্রতিক্ষণ/এডি/আরএম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G