১০০ কোটি অ্যান্ড্রয়েড হ্যাকিং এর মুখে
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
বিশ্বজুড়ে প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ফোনই চলে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে। এর যেমন সুবিধা আছে তেমনি ঝুঁকিও আছে। কারণ অপারেটিং সিস্টেমে কোনো বাগ ( নির্মাণ ত্রুটি) থেকে গেলে তা পুরো কমিউনিটিতে আঘাত হানে। ফেলে দেয় সকল মোবাইলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঝুঁকির মুখে।
বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০০ কোটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের নিরাপত্তা এখন হুমকির মুখে। কারণ, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ‘কোয়াডরুটার’ নামের ভাইরাসটির আক্রমণ ঘটেছে। এর ব্যবহারে হ্যাকাররা ফোনের ক্যামেরাসহ যাবতীয় ডেটায় প্রবেশ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের জনপ্রিয় কয়েকটি স্মার্টফোন, যেমন: গ্যালাক্সি এস ৭, এস ৬, এইচটিসি ওয়ান এম ৯, এইচটিসি ১০, নেক্সাস ৫ এক্স, নেক্সাস ৬পি ও নেক্সাস ৬ হ্যাকিং ঝুঁকিতে আছে। এমনকি সবচেয়ে নিরাপদ স্মার্টফোন হিসেবে ব্ল্যাকবেরির দাবি করা ডিটিইকে ৫০ ফোনটিও ঝুঁকিতে। সব মিলিয়ে ৯০ কোটি অ্যান্ড্রয়েডচালিত স্মার্টফোন হ্যাকিং ঝুঁকিতে আছে।
এপ্রিল থেকে জুলাই মাসের মধ্যে এই সফটওয়্যার ত্রুটি দূর করতে প্যাঁচ উন্মুক্ত করেছে কোয়ালকম। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড ইকোসিস্টেমের ভিন্নতার কারণে এখনো অধিকাংশ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর কাছে প্যাঁচ যায়নি।
অ্যান্ড্রয়েডের কিছু স্বেচ্ছাসেবী উন্নয়নকারী (ডেভেলপার)বাগগুলো চিহ্নিত করেছেন। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড ফোন এখন নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছে এমনকি ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলোও। এর প্রধান কারণ, প্রায় প্রতিটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ব্যবহার করা হয় আমেরিকাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কোয়ালকমের প্রসেসর চিপ। আর এই প্রসেসরগুলো উৎপাদনের সময় থেকেই কিছু ক্রটি থেকে গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।
কোয়ালকম এই সমস্যার নাম রাখেন ‘কোয়াড রুটার’ অর্থাৎ চারটি কারণে বা চারটি বাগের কারণে যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনের রুটে গিয়ে তার সকল তথ্য হ্যাক করা যাবে। তাই একে অভিহিত করা হচ্ছে কোয়াড রুটার। এইভাবে রুটে প্রবেশ করে ফোনের সকল সেটিংস থেকে শুরু করে মোবাইলের পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয়া সম্ভব।
এমনকি তৃতীয় পক্ষের অ্যাপসও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। শুধু তাই নয়, আপনার মোবাইলে যদি একবার কেউ এই ক্রটির সূত্র ধরে প্রবেশ করতে পারে তবে সে আপনার ফোন থেকে শুধু আপনার ডাটা ডাউনলোডই করতে পারবে না, করতে পারবে আপলোডও!
চেক পয়েন্টের মোবিলিটি প্রোডাক্ট ব্যবস্থাপনার প্রধান মাইকেল শাওলভ বলেন, এই মুহূর্তে যাদের কাছে ডিভাইস আছে, কেউ পূর্ণ নিরাপদ নয়।
কোয়ালকমের আরেক কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। গবেষকদের মাধ্যমে আমরা এই হুমকি সম্পর্কে সচেতন। এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলের মধ্যে হুমকি সম্পর্কে তথ্য আসে। এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যেই সবার নিরাপত্তার জন্যে ৪ ধরনের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/আরএম