১৭ বছর কারাবাসের পর জামিনে মুক্তি!
১৭ বছর বিনা বিচারে কারাবাসের পর অবশেষে জামিনে মুক্তি পেলেন শিপন। এ নিয়ে বেসরকারী একটি টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনের সুবাদে হাইকোর্টের নজরে আসায় এ আদেশ দেন আদালত।
মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে শিপনকে মুক্তি দেওয়া হয়।
১৯৯৪ সালে ঢাকার সূত্রাপুরের দুই মহল্লার বাসিন্দাদের মধ্যে মারামারিতে এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার মামলায় এত বছর ধরে তিনি বিনা বিচারে জেলের ঘানি টানছিলেন।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক জানান, দুপুরে তার জামিনসংক্রান্ত কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছে। পরে তা যাচাই-বাছাই শেষে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শিপনকে মুক্তি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল শিপনকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচার করে। ঐ প্রতিবেদন গত ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কুমার দেবুল দে। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে ৮ নভেম্বর শিপনকে আদালতে হাজির ও তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার নথি তলব করেন।
নির্দেশ অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ ৮ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির করে। এ সময় আদালত শিপনকে কাঠগড়ায় ডেকে তার পরিচয় জানতে চান। দীর্ঘ ১৭ বছর হাজতবাস থাকার বিষয়েও খোঁজ-খবর নেন।
পরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মো. শিপনকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন। একই সঙ্গে আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা জজকে নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে দুই মহল্লার মধ্যে মারামারিতে মাহতাব নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মো. জাবেদ বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দুই নম্বর আসামি করা হয় মো. শিপনকে। এজাহারে তার বাবার নাম অজ্ঞাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পরে ১৯৯৫ সালে দেওয়া অভিযোগপত্রে বাবার নাম উল্লেখ করা হয় মো. রফিক। ঠিকানা উল্লেখ করা হয় ৫৯, গোয়ালঘটা লেন, সূত্রাপুর, ঢাকা। পরবর্তীতে ২০০০ সালে শিপনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিভিন্ন স্থানে হাজতবাসের পর সম্প্রতি তাকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে ঢাকার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে ওই মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/অনি