২৬ বছর ধরে বনে বসবাস!
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডট কম.
আদিম যুগে মানুষ যখন সভ্যতার সন্ধান পায়নি তখন বনে-জঙ্গলে বসবাস করত। আবার ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় অনেক সন্ন্যাসী বা ধর্ম প্রচারক বসবাসের জন্য নিরিবিলি বনকে বেশি পছন্দ করতেন। কিন্তু আজকের এই আধুনিক বিশ্বে স্থায়ীভাবে বনবাসের কথা হয়তো কেউ চিন্তাও করতে পারেন না। আপনি চিন্তা করতে পারুন আর নাই পারুন মাইক ডস কিন্তু অসম্ভবকে সম্ভব করে ছেড়েছেন। তিনি আধুনিক এই বিশ্বে জন্ম নিয়েও একজন বনমানুষ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ওয়াশিংটনের বাসিন্দা মাইক ডজ গত ২৬ বছর ধরে মনুষ্যজগত ত্যাগ করে স্থায়ীভাবে জঙ্গলে বসবাস করছেন। আচার-ব্যবহার ও চেহারায় তিনি বর্তমানে একজন পূর্ণ বনমানুষ।
এখন থেকে ২৬ বছর আগে ডজ এই জগত-সংসারকে ত্যাগ করে বনবাসের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তিনি সব সময় ভাবতেন এই মনুষ্যজগতে তিনি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন না। বনবাসে যাওয়ার আগে তারুণ্যে তিনি ছিলেন একজন মার্কিন নৌসেনা এবং সমর বিশেষজ্ঞ। তিনি একজন সমর বিশারদ হলেও তিনি যুদ্ধ-বিগ হকে খুবই ঘৃণা করতেন। আর তাই তিনি শান্তির অন্বেষায় বনবাসের সিদ্ধান্ত নেন।
অবশ্য এটি তার বংশগত আকাক্সক্ষাও বলা যেতে পারে, কারণ মাইক ডজের দাদাও বনবাসে গিয়েছিলেন এবং তিনি কয়েক দশক একাকী বনে-জঙ্গলে বসবাস করেছিলেন। দাদার বনবাসের কাহিনী শুনে শৈশব থেকেই ডজের মনে বনবাসের আকাক্সক্ষা জেগেছিল।
মাইক ডজ গত দুই দশক ধরে একাকী ঘুরে বেড়াচ্ছেন অলিম্পিক উপদ্বীপের গহীন অরণ্য হোহ রেইন ফরেস্টে। বর্তমানে এ জঙ্গলই তার আবাসস্থল। এ বনের পশুপাখি, জীবজন্তু, গাছগাছালি এখন তার পরিবারের সাথি। এদের সাথেই তিনি থাকেন মাসের পর মাস, বছরের পর বছর। এই বনের ফল-ফলাদিই এখন তার প্রধান খাদ্য। দীর্ঘদিন বনে বাস করার ফলে ডজের চেহারাও হয়ে গেছে বনমানুষের মতো। জট পাকানো চুল আর তাতে জন্মেছে পরগাছা। তার নিজের মাথাটায় যেন একটি জঙ্গল।
নিজের ইচ্ছায় হোক বা দাদার অনুপ্রেরণায় হোক আধুনিক মানব সভ্যতা ছেড়ে ডজ এখন পুরোপুরি বনের মানুষ। বনের জীবজগতই এখন তার আপন। হয়তো সত্যিই তিনি মনুষ্যজগতের উপযোগী ছিলেন না, তাই বনই তার জন্য শ্রেয়।
প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল