৩ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
জেলা প্রতিনিধি
পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি রোধে ‘পলিথিন ব্যাগ ও কৃত্রিম তন্তু দ্বার প্রস্তুত পলিপ্রোপাইলিনের মোড়ক ব্যবহারের অভিযোগে দেবীদ্বারে ৩ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের আর্থিক দন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। সোমবার ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও দেবীদ্বার উপজেলা সহকারী কমিশনার দাউদ হোসেন চৌধূরীর নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত ঐ দন্ডাদেশ কার্যকর করেন।
পলিথিন ব্যাগ ও কৃত্রিম তন্তু দ্বার প্রস্তুত পলিপ্রোপাইলিনের মোড়ক ব্যবহারের অভিযোগে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ২০১০ এবং পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা আইন ২০১৩ এর আলোকে ঐ তিন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে- ভাই ভাই চাউলের আরতে এক হাজার টাকা, প্রদীপ সাহার মূদী দোকানে আট শত টাকা এবং আবুল কাসেম চেয়ারম্যারে চাউলের আরতে আটশত টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান, উপ-পরিদর্শক (এস,আই) আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে একদল পুলিশসহ ভূমি অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তাগন।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও দেবীদ্বার উপজেলা সহকারী কমিশনার দাউদ হোসেন চৌধূরী বলেন, পলিথিন ব্যাগ ও কৃত্রিম তন্তু দ্বার প্রস্তুত পলিপ্রোপাইলিনের মোড়ক ব্যবহারের ফলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এসকল কৃত্রিম দ্রব্যাদী মাটির গুনাগুণের ক্ষতিসাধন এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় বাঁধাগ্রস্থ্য করে। অপর দিকে পাটজাত মোড়ক পুনঃ ব্যবহারযোগ্য পঁচনশীল ও পরিবেশ বান্ধব। তাই সরকার পন্য সরবরাহ ও বিতরণে কৃত্রিম মোড়কের ব্যবহারে সৃষ্ট পরিবেশ দূষণ রোধকল্পে বাধ্যতামূলকভাবে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিতকরণে “পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ এবং পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা, ২০১৩” প্রণীত হয়েছে। ঐ আইন ও বিধিমালা প্রয়োগ এবং বাস্তবায়ন সম্পর্কে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে সর্বসাধারণকে অবহিত করেই আজ (৩০ নভেম্বর) দেশব্যাপী এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের অভিযানও সপ্তাহব্যাপী অব্যাহত থাকবে।
দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ এবং পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা, ২০১৩ এর প্রণীত আইন অনুসারে ৬টি পণ্য অর্থাৎ ধান, চাল, পাট, গম, ভূট্টা, সার ও চিনি মোড়কীকরণে পাটের ব্যাগ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইনটি প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়, বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়, পাট অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও র্যাবের সহায়তায় অদ্য ৩০ নভেম্বর থেকে সপ্তাহব্যাপী সড়ক, মহাসড়ক, চাল উৎপাদনকারী এলাকা এবং ঢাকার প্রবেশমুখসহ একসাথে সমগ্র দেশে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযান পরিচালনাকালে আইন লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এক্ষেত্রে ব্যবসায়িরা ক্ষোভের সাথে বলেন, আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি, উৎপাদনকারী বড় বড় প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা ধান, চাল, পাট, গম, ভূট্টা, সার ও চিনি সরবরাহ করি। তারাই মোড়কীকরণে পাটের ব্যাগ না দিয়ে প্লাষ্টিকের ব্যাগ দিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের জরিমানা করা হচ্ছে। ব্যবসা বন্ধ করলে আমরা যেমন না খেয়ে মরব, সাধারণ ক্রেতারাও ভোগান্তির স্বীকার হবেন। আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে সরকার ঐসব প্রতিষ্ঠান যাদের কাছ থেকে আমরা মালামাল সরবরাহ করি, তাদের মোড়কীকরণে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/এআরকে