৫৭ দিনে নিহত ১১৪

প্রকাশঃ মার্চ ৩, ২০১৫ সময়ঃ ৪:৪৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৪৯ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

gajiঅবরোধের ৫৭ দিনে সহিংসতা আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথাকথিত ক্রসফায়ার ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডে মোট ১১৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রুহুল আমিন গাজী।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠে তিনি জানান, দেশী-বিদেশী পত্রিকা ও মানবাধিকার সহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী এ হিসাব করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নিহত হয়েছে ১১৩ জন। এর মধ্যে একটু আগে খবর এসেছে তিতুমীর কলেজের নিখোঁজ ছাত্র মেহেদী হাসান রুয়েলের লাশ তার এলাকায় পাওয়া গেছে। তাতে নিহতের সংখ্যা দাড়ালো ১১৪ জনে।

তিনি আরো বলেন, সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী চলমান সংকটে ১লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যাতে দেখা যায় দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

গাজী বলেন, বিশ্ব এবং দেশের সর্বমহল সংকট সমাধানে দুই পক্ষকেই সংলাপে বসার আহ্বান জানালেও সরকারের পক্ষ থেকে সংকট সমাধানের কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। এসময় তিনি বর্তমান সমস্যার সমাধানের জন্য সংলাপে বসারও আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আদালতের তোয়াক্কা না করে তাদের আইনের উর্ধে মনে করছে। ইচ্ছামত বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। অপর দিকে আদালত সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ে গেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

গাজী বলেন,বিএনপি এবং একই সঙ্গে জোটের শরিক জামাতকে‘সন্ত্রাসী জঙ্গী’সংগঠন আখ্যায়িত করে অপপ্রচার চালাচ্ছে । এদুটি রাজনৈতিক দলকে নির্মূল করার জন্য সরকার সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে । জামাতের অফিস আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে । গণতন্ত্রহীন দুঃসহ এই ফ্যাসিবাদি শাসনে বর্তমানে এক দমবন্ধ অবস্থা মোকাবেলা করছে জনগণ।

তিনি বলেন,২০০৯ সালে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রোষানলে পড়ে গণমাধ্যম। আমার দেশ ,চ্যানেল ওয়ান , দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে । প্রবীণ সাংবাদিক আবুল আসাদকে মামলা দেয়া হয় এর আগেও তাকে ১০মাস কারাবন্ধী রাখা হয়।

গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন ,বর্তমানে দেশের আদালত সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিচারই যদি হবে, তবে বকশীবাজার মাঠে কেন? ওখানে তো সেনা আইনে বিডিআর বিদ্রোহের বিচার হয়। খালেদা জিয়ার বিচার কেন সেখানে হবে। আসলে সরকার এর মাধ্যমে একটি ভীতি ছড়ানোর চেষ্টায় আছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নামে দুদকের মামলা আছে। যেমন মামলা আছে খালেদা জিয়ার নামে। তার বিরুদ্ধে যে কোন মুহুর্তে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে। এমন ঘটনা ইতিহাসে বিরল।

জাফর উল্লাহ বলেন, সরকারি হিসেবে ১৪ জন জঙ্গিদের হাতে নিহত হয়েছে। অপর দিকে সরকারি বাহিনীর হাতে মরেছে ১১৪ জন। এসময় তিনি বলেন, এরশাদ সাহেবও তার ক্ষমতা থাকাকালীন কেঁদেছিলেন শেখ হাসিনাও বার্ণ ইউনিটে গিয়ে কান্নাকাটি করেছে। অথচ বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিষয়ে একদিনও বক্তব্য দেননি।

জাফর উল্লাহ দাবি করেন, বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে জঙ্গি বানানোর চেষ্টা করছে। তারা মনে করে জঙ্গি প্রমাণ করতে পারলে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা যাবে। কিন্তু তাদের মনে রাখাতে হবে পশ্চিমা শক্তিগুলোই জঙ্গি তৈরী করে তারাই লালন করে।

মাহমুদুর রহমান মান্নার বিষয়ে তিনি বলেন, অপরাধ করেছে ছাত্রলীগ। একজন মোবাইলে কথা বলতেই পারে। তাই বলে ছাত্রলীগ তার নাম মুছে দিতে পারে না। শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল গঠনের জন্য যেমন তার নাম মুছে দিতে পারিনা। কারণ মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান ছিল।

সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ বলেন, পত্রিকায় একটি খবর বেরিয়েছে মানবাধিকার কমিশিনের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে । এটা যদি সত্য হয় তবে তা খুবই দু:খ জনক।

কারণ দেশে এতগুলো বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। দুটি ছেলে বুকে ৫৪টি গুলিবিদ্ধ হয়েছে তারপরও পুলিশ বলেছে গণপিটুনি। সে সময় এই চেয়ারম্যান কোন কথা বলেনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ড্যাব এর সহ-সভাপতি আবদুস সালাম, গীতিকার গাজী মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রতিক্ষণ /এডি/নাহিয়ান

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G